পাতা:মোহন অম্‌নিবাস দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏO 9 মোহন অমনিবাস শ্যামাপদ দুই পা পিছাইয়া গিয়া ক্ৰোধে কাঁপিতে কাঁপিতে কহিল, "তুমি একতি থালা । আমি বিয়ে কলব’না।” করালীচরণ আপন পত্রের মুখে “শালা’ সম্বোধন শুনিয়া শুনিয়া গা-সহা করিয়া লইয়াছিল । কিন্তু বিকৃত-মস্তিক পত্রকে শাসন করিতে গেলে পাছে বিপরীত ফল হয়, এই ভয়ে মনের রাগ মনে চাপিয়া যাওয়া ভিন্ন দ্বিতীয় পথ পাইল না কহিল, "বিয়ে করব না। যদি তুই বিয়ে না করিস, তবে মেধো চাকরটার সঙ্গে লিয়ে দিয়ে দেবো । দেখি হতভাগা, তুই কত সুখী হস্য ।” শ্যামাপদ চক্ষ বিসফারিত করিয়া কহিল, "মেধো থালার সঙ্গে ?” "হাঁ, মেধ্যে শালাকেই দেব । তাজ বিয়ে হবেই হবে ।" করালীচরণ উঠিয়া দাঁড়াইল । শ্যামাপদ বিপদ গণিল । কারণ তাহার মতো দীপালীর হিতাকাঙক্ষী আর দ্বিতীয় কেহ সে বাড়ীতে ছিল না । কিছুক্ষণ ভাবিয়া-চিন্তিয়া কহিল, "আত্তা আমিই বিয়ে কলাব।” করালীচরণ খুশি হইয়া উঠিল । কহিল, “যাও, মেয়েদের বর সাজাতে বলোগে। সন্ধ্যার পরই লগ্ন । আমি এদিকের বন্দোবস্ত দেখি ।” করালীচরণ বাহির হইয়া গেল । শ্যামাপদ কিছুক্ষণ চিন্তা করিল ও পরে বাড়ীর ভিতর প্রবেশ করিল। দীপালীর ক্ৰন্দনের আর বিরাম ছিল না । তাহার মনে মুক্তির সকল আশা বিলুপ্ত হইলেও, সে এই ভাবিয়া কিঞ্চিত সাহস পাইতেছিল যে, নিশ্চয়ই এমন কিছ: ঘটিয়াছে, যাহার ভয়ে করালীচরণ সেখানে বিবাহ না দিয়া, চন্দননগরে পলাইয়া আসিতে বাধ্য হইয়াছে। তবে কি দেবতা-মোহন আমাকে উদ্ধার করিবার জন্য চেটিত হইয়াছেন ? কিন্তু আজ রাত্রেই বিবাহ। এই সময়ের মধ্যে আমাকে কি তিনি মুক্ত করিতে পরিবেন ? আমি কি আত্মহত্যা করিয়া সকল জনালা জড়াইব ? না শেষ মহত" অবধি মন্তি দতের অপেক্ষা করিব ? দীপালী চিন্তিত হইয়া পড়িলপ বহলক্ষণ চিস্থা করিয়া স্থির করিল যে, মরিবার ক্ষণ-তো আর পলাইয়া যাইতেছে না ! যখন এই বিবাহ বন্ধ না হওয়ার অথাই হইবে—আমার મ:કૃષ્ટિને আমি শেষ মহত" অবধি অপেক্ষা করিব । তারপর কেহ না আসেন, দয়াময় পরমেশবর বিরপে হন, তাহা হইলে তখন আর আমাকে কে ধরিয়া রাখিবে ? মরিব, আমি মরিব । বালিকার মন আশায় সঞ্জীবিত হইয়া উঠিল। চন্দননগর । বিদেশে আত্মীয়Pলঞ্জন কেহ নাই। মাত্র কয়েকটি ঝি ও চাকরের মেলা। ফটকে নহবত বাজিতেছিল । দীপালীর মনে হইতেছিল, কে যেন গমরিয়া গমরিয়া কাঁদিয়া ফিরিতেছে। অবশেষে সন্ধা আসিল । পরিচারিকারা বর ও কনেকে সুসজ্জিত করিয়া রাখিয়ছিল । সময় যত নিকটবতী হইতেছিল, দীপালীর চক্ষ তত শংক হইয়া । সে মরিধার জন্য প্রস্তুত হইয়াছে। তবে আর কিসের জন্য ক্ৰন্দন রযে ?