পাতা:মোহন অম্‌নিবাস দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

૨ মোহন অমনিবাস এই ঘোষণায় সপার উপর সখী হইল শ্রীমতী রমা। তাহার সাথে পণেতা আসিলেও চোখে না-দেখা লাল,কণার মত একটা ব্যথা সকল সময়েই অনুভূত হইত। অভিজাত বংশের কন্যা হইয়া, স্বয়ং সুশিক্ষিতা, বিলাতে শিক্ষা-প্রাপ্তা, আধুনিক তরণী বিধায়, তাহার মনের জন্মগত সংস্কার প্রাণপণে ভুলিতে চেণ্টা করিয়াও, ইতিপবে সে পণেরপে সফলকাম হয় নাই ; এবার তাহার সকল সুখে পণেতা আসিল। রমা ভাবিল, এখন তাহার আর কিছ: প্রাথনা করিবার নাই। এত দিনে শ্ৰীমদনমোহন মুখ তুলিয়া চাহিয়াছেন । আর মোহন স্বয়ং ? এইবার তাহার ইতিহাস শুননে । এই ঘটনার কয়েক দিন পরে কলিকাতা রাসবিহারী এভিনিউ-স্থিত একটি মুবাহৎ প্রাসাদের সমসজ্জিত ড্রইং-রমে বসিয়া মোহন সকালের ডাকে প্রাপ্ত নিয়মিত সতপোকার পত্রসমহ পাঠ করিতেছিল । সম্মখে বসিয়া শ্রীমতী রমা তাহাকে সাহায্য করিতেছিল। উভয়েই নীরব । উভয়েই পত্র পাঠ করিতেছিল । অধিকাংশ পত্রই নিয়মিত সাহায্য-প্রাপ্ত নর-নারীর নিকট হইতে আসিয়াছিল । তাহারা মোহনের বর্তমান স্বাধীন ও সভ্য জীবনে উৎকণ্ঠিত হইয়া, পত্র লিখিয়া জানিতে চাহিয়াছিল যে, ভবিষ্যতে তাহারা আর নিয়মিত সাহায্য পাইবে কি-না ! কারণ তাহারা এই ভাবিয়া ভীত হইয়া পড়িয়াছিল যে, মোহন যদি দস্থ্যব্যত্তি না করে, তবে সাহায্যের অর্থ আসিবে কোথা হইতে ? দুটি ধনীর সবসব লন্ঠন করিয়া, মোহন যে রিক্ত, অনাথদের দান করিত, একথা তাহাদের নিকটও অজ্ঞাত ছিল না । ইহারা ব্যতীত মোহনের বিরাট সহকমী'র দলও নানা প্রশ্ন করিয়া, অতীব উৎকন্ঠায় ভাঙ্গিয়া পড়িয়া, জানিতে চাহিতেছিল, এইবার তাহারা কি করিবে ? কি করিয়া তাহাদের চলিবে ? কি করিয়া তাহাদের অন্ন-বস্ত্রের সংস্থান হইবে ? এই প্রকার শত প্রশ্নে পত্র ভরিয়া, তাহাদের কতরি নিকট পাঠাইতেছিল । এক সময়ে রমা মুখ তুলিয়া স্বামীর দিকে চাহিতে দেখিল, মোহন মদন মদন হাস্য করিতেছে । সে কহিল, "কি হ’ল ?” భీపి মোহন হাসি-মুখে কহিল, “ভাবছি, সৎ হওয়ার এত বিপদ, য়াদ পবোহ্লে জানতাম, তা হলে বোধ হয় কিছুতেই হতে চাইতাম না।” ১৮ রমার মাখ মান হইয়া গেল। সে কহিল, "সত্যি তু:ি ঐকথা ভাবছ ?” মোহন মধর স্বরে হাসিমা উঠিল । সে পত্নীর মন্খেরদিকে প্রেম-বিহবল দটিতে চাহিয়া কহিল, “ন গো, না । আমি তা’ ভাবছি না। ষে-পরশমণি আমার মত কদয* লোহাকেও সোনা৩ে পরিণত করেছে, সেই মণি আমার চোখে থাকতে, আমি কি কখনও ওসব কু-চিন্তা করতে পারি ? আমি শধ্যে এই কথাটাই ভাবছি, এক সময়ে যে-জীবন একমাত্ৰ কাম্য ভেবে জালের পর জাল দবেরি বেগে বনে চলেছিলাম, একদিন যে সেই জালেখ আমাকে পড়তে হবে, তা? যদি বুঝতে পারতাম, তা' হলে---” এই অবধি বলিয়া মোহন নীরবে রমার দিকে ক্ষণকাল চাহিয়া থাকিয়া পুনশ্চ কহিল, "এখন এদের সম্বন্ধে কি করা যায়, রানী ?" রমা শাস্ত কণ্ঠে কহিল, "কাদের জন্যে ? তোমার সহকমীদের জন্যে ?"