পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কারাগারে মোহন > > 。 হাঁপাইতে লাগিলেন। ঘামে র্তাহার শরীর ভিজিয়া উঠিল। কষ্ঠ শুষ্ক হইল। এমন সময় নিস্তব্ধ প্রকৃতি-বক্ষ কম্পিত করিয়া একটা মোটরের বঁাশী উত্থিত হইল। কুমার সাহেব ভীষণভাবে চমকিত হইয়া মিঃ বেকারের মাথা ধরিয়া সজোরে নাড়িয়া দিয়া কহিলেন, “মিঃ বেকার! বেকার!” আচমকা ধাক্কা খাইয়া মিঃ বেকার ধড়মড় করিয়া উঠিয়া বসিলেন। তিনি বিহুল দৃষ্টিতে চাহিয়া কহিলেন, “কি ব্যাপার? কি হয়েছে?” “ঐ যে শব্দ হ’ল!” কুমার উত্তেজিত স্বরে কহিলেন। মিঃ বেকার হতাশ স্বরে কহিলেন, “কোথায় শব্দ? ও আমার নাক ডাকছিল।” কুমার সাহেব প্রতিবাদ করিয়া কহিলেন, “না না, ঐ শুনুন।” - মিঃ বেকার শুনিলেন, একটা মোটরের বংশী-ধ্বনী দূরে মিলাইয়া গেল। তিনি বিচলিত কুমার সাহেবের দিকে চাহিয়া কহিলেন, “ওটা মোটরের হনের শব্দ।” কুমার চোখ মুখ কপালে তুলিয়া কহিলেন, “তবে ?” মিঃ বেকার অধৈর্য স্বরে কহিলেন, “কুমার সাহেব, আপনি যে প্রকৃতিস্থ নন, তা’ আমার উত্তমরূপে ধারণা হয়েছে। আপনি কি মনে ভাবেন, দসু মোহন মোটরের হর্ন বাজিয়ে শহর তোলপাড় কোরে চুরি করতে আসবে? আর আপনার প্রাসাদের ওপর কামান দেগে মণি-রত্ন লুঠ কোরে যাবে? মিছে অস্থির হচ্ছেন কেন? তা’র চেয়ে আপনি একটু ঘুমিয়ে নিন। আপনি না ঘুমুতে পারেন, তবে দয়া কোরে আমার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবেন না। কারণ মিথ্যে পণ্ডশ্রম করা আমার ধাতুতে সহ্য হয় না।” মিঃ বেকার পুনরায় শয়ন করিলেন এবং অবিলম্বে তাহার উচ্চ নাসিকা-ধ্বনি শ্রুত হইতে লাগিল। কিন্তু কুমার সাহেব শয়ন করিলেন না, তিনি কান খাড়া করিয়া বসিয়া রহিলেন। মাত্র একটি বার হনের শব্দ ছাড়া আর তিনি কিছুই শুনিতে পাইলেন না। ধীরে ধীরে প্রভাত হইল। চারিদিকে পরিপূর্ণ শাস্তি বিরাজ করিতে লাগিল। সমুদ্রের ভয়ার্ত গর্জন ধ্বনি প্রভাতলোকে হ্রাস পাইল। মিঃ বেকার গাত্ৰোত্থান করিলেন। হাসিমুখে কহিলেন, “যাক, ভালয় ভালয় রাত্রি কেটে । গেছে! আমি আপনাকে কি বলেছিলাম, কুমার সাহেব? মিছামিছি আপনার অত্বগুলো টাকা জলে যাবে। বলতে কি, আমার লজ্জা হচ্ছে ও টাকা আপনার কাছ থেকে নিতে। আসুন দেখিগে আমার সহচরেরা কি বলে ?” * لاتي يتم (S8) ് কুমার সাহেবের মন প্রভাতের শান্ত বাতাসে গ্লানি-শূন্য হইয়া উঠিল। রাত্রিতে যে কিছু খটিল না, এই চিন্তায় তাহার মন আনন্দে পরিপূর্ণ হইয়া গেল। তিনি মিঃ বেকারের সহিত হলঘরে উপস্থিত হইয়া দেখিলেন, বাহিরে রক্ষী প্রহরী একটা টুলের উপর বসিয়া দেওয়ালে Xেস দিয়া নিদ্রা যাইতেছে। - প্রহরীকে নিদ্রা যাইতে দেখিয়া মিঃ বেকার হুঙ্কার ছাড়িয়া কহিলেন, “বাঃ! বেশ কর্তব্য এান তো তোমার? ঘুমানো বার করছি আমি! বার বার নিষেধ কোরে গেলাম যা না । করতে, এত বড় সাহস—সেই কাজ করতে একটু দ্বিধা পর্যন্ত হ’ল না!” কুমারের দিকে ০াত বাড়াইয়া কহিলেন, “কই চাবি দিন? ভিতরে যাই চলুন।”