পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ ՀՀ মোহন অমনিবাস ওর অলক্ষ্যে ওকে ক্লোরোফরম করা হয়েছিল। কারণ ক্লোরোফরমের সব কিছু চিহ্নই ওর সময় নষ্ট করা চলবে না। আমি দেখি, যদি আপনার রত্নগুলো ফিরিয়ে আনতে পারি।” দ্বিতীয় প্রহরীও প্রথমের মত সব কিছু প্রশ্ন অস্বীকার করিল; তাহারা একবাক্যে কহিল, তাহারা কিছুই দেখে নাই। সেই দিন প্রাতঃকালে পুরীর পুলিস-অফিসে দসু মোহনের নামে, যে মাদ্রাজে জেলে বিচারাধীন কয়েদী অবস্থায় রহিয়াছে, চুরির অভিযোগ পেশ করা হইল। (S4) দেশময় হৈ চৈ পড়িয়া গেল। দসু্য জাদুকর মোহনের অলৌকিক শক্তি বর্ণনায় প্রতিটি সংবাদপত্রের সম্মুখ পৃষ্ঠা পূর্ণ হইতে লাগিল। কুমারের নিভৃত জীবন পুলিস-অফিসারেরা, কাগজের রিপোর্টারের দল, শখের গোয়েন্দারা অতিষ্ঠ করিয়া তুলিল। তিনি কেন মিঃ বেকারের কথা শুনিয়া পুলিসে ডায়ের করিলেন ? না করিলে এত ঝঞ্জাট পোহাইতে হইত না ভাবিয়া কুমার নিজের উপর ক্রুদ্ধ হইয়া পড়িলেন। কিন্তু সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার ঘটিল যে, দসু মোহন যে-পত্ৰ কুমারকে লিখিয়া ছিল। এবং যে-পত্রের বিষয় পুলিস-সুপার, তিনি ও মিঃ বেকার ব্যতীত অন্য কেহই জানিতেন না, সেই পত্রের অবিকল অনুবাদ কি করিয়া বাঙলার ডাক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হইল, বা কে ঐ পত্রের বিষয় কাগজকে জানাইল, তাহাও কুমারের নিকট সমস্যা হইয়া দাড়াইল। দসু মোহন জেলে থাকিয়া চুরি করিতেছে, কেহ তাহাকে ধরিয়া রাখিতে পারিতেছে না, সে রাত্রে জেল হইতে অদৃশ্যভাবে বাহির হইয়া যায়, মোহন ডাকিনী মন্ত্র জানে, এইসব নানা উদ্ভট কাহিনীর আলোচনায় দেশ সরগরম উঠিল। পুরতান প্রাসাদের ভিতর সুড়ঙ্গ আছে, এই কথাও চারিদিকে রাষ্ট্র হইল। কাগজে কাগজে সুড়ঙ্গের কাহিনী—এমন কি, কল্পিত মানচিত্র পর্যন্ত প্রকাশিত হইতে লাগিল। পুলিস-অফিসারগণ সুড়ঙ্গ আবিষ্কারের চেষ্টায় বৃহৎ প্রাসাদের চতুঃপাশ্বের ইট তুলিয়া নানা কল্পনা-জল্পনায় সারা ভারতবর্ষ মুখরিত হইয়া উঠিল। দসু মোহনের অলৌকিকশক্তির কাহিনী পড়িয়া সকলে শিহরিয়া উঠিতে লাগিল। ৯> যখন সুড়ঙ্গের কোন অস্তিত্ব খুজিয়া বাহির করা গেল না, তখন এই প্রশ্ন উদয় হইল যে, তাহা হইলে বৃহৎ তালা-বন্ধ কক্ষের ভিতর হইতে আলমারি, চেয়ার টেবিল প্রভৃতি বড় বড় বস্তুগুলি কি করিয়া অদৃশ্য হইয়া গেল? তাহারা ভূতের মত নিরাকার বস্তু নহে, সুতরাং সে ভাবে অদৃশ্য হইতে পারে না। সুতরাং কোন লোক প্রবেশ করিয়াছিল। যদি প্রবেশ করিয়াছিল, তবে দ্বার বন্ধ দেখা গেল কেন? তবে কোন পথে তাহারা বাহির হইয়া গেল ? স্থানীয় পুলিস এই কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হইয়া হাল ছাড়িয়া দিল এবং কটকের হেড-কোয়ার্টারে রিপোর্ট পাঠাইল। কিন্তু কটকের পুলিস সমস্ত ব্যাপার কাগজ-পত্রে ও পুরীর রিপোর্টে অবগত হইয়া নিজেদের মধ্যে আলোচনা করিয়া কর্তব্য স্থির করিলেন।