পাতা:মোহন অম্‌নিবাস প্রথম খণ্ড.pdf/১৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মোহন ও রমা 3 ఫి S কোরে তার মনে এই সাস্তুনা লাভ করলে যে, তার মা বিনা-চিকিৎসায় বিনা-পথ্যে মারা গল না। তারপর মা মারা গেলেন। বছরের পর বছর কেটে যায়। সেদিনের শিশু এদিনের মানুষ হয়ে উঠল।” - তপন ক্ষণকাল নীরব হইয়া পুনরায় বলিতে লাগিল, “আমি এবার একটু কল্পনার চক্ষে পর্ণনা করবো। সেই ছেলেটি মানুষ হয়ে তার বাল্যকাল, শিশুকাল যে প্রাসাদে অতিবাহিত হয়েছিল, সেখানে একবার ফিরে যাবার যদি অভিপ্রায় করে এবং যে ধনী স্বামী ও স্ত্রী তার অভাগিনী নিরপরাধিনী মা’কে অপরাধী কোরে আশ্রয়চু্যত করেছিল, তাদের দেখবার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং যে-বাড়ীতে সে এমন রোমাঞ্চকর নাটকের অভিনয় করেছিল, পুনরায় সেই বাড়ীর মধ্যে একবার আসতে চায়, তা হলে কি তাকে দোষ দেওয়া যায়?” তপনের কথা প্রত্যেকের মনে একটা অনাগত বিপদের ছায়াপাত করিল। কুমার ক্ষণকাল নীরবে চাহিয়া থাকিয়া কহিলেন, “এইবার বলুন, আপনি কে?” “আমি? কেন, আপনার আত্মীয়ের পুত্র তপন! আমাকে আবার আপনি বোলে সম্বোধন করছেন কেন?” তপন বিস্ময় প্রকাশ করিয়া কহিল। কুমার অধৈর্য স্বরে কহিলেন, “তবে এসব কথার অর্থ কী?” তপন তাচ্ছিল্য স্বরে কহিল, “কিছুই নয়। আপনারা আমার উক্তিকে নিছক বিদ্রুপ বোলে ভেবে নিন। আমি শুধু কল্পনার চক্ষুতে যা দেখছি, তাই পরিশেষে বর্ণনা করেছি। আমি শুধু ভাবছি, যদি মীরার সন্তান আজ পর্যন্ত বেঁচে থাকে এবং আপনাদের নিকট এসে দলে যে, সেই শুধু একমাত্র অপরাধী এবং সে একাজ করতে বাধ্য হয়েছিল, কারণ ধনীর অত্যাচারের পর অত্যাচারে তার মা'র জীবন দুৰ্বহ হয়ে উঠেছিল এবং তিনি যে ঝি’র কাজটুকু করছিলেন, তাও ধনী সম্প্রদায়ের সহ্য হচ্ছিল না, তাকে নানা উপায়ে নানা ভাবে উত্যক্ত করতে আরম্ভ করেছিল এবং তার মাকে দিন রাত্রি অসুখী দেখে সে বেপরোয়া হ'য়ে ঐ কাজ করতে বাধ্য হয়েছিল, তবে আপনারা তাকে ক্ষমা করবেন না?” তপন চেয়ারের উপর ঝুঁকিয়া বসিয়া বীণার মুখের দিকে চাহিয়া কথা কহিতেছিল। আর কাহারও সন্দেহ রহিল না যে, তপন আর কেহ নহে, সে মিসেস মীরা গুপ্তার পুত্র। ওপনের প্রত্যেকটি কথা, প্রত্যেকটি ভাব এই একই সত্যে উপনীত করে?” কুমার দ্বিধাগ্রস্থ হইয়া উঠিলেন। তিনি তপনের বিরুদ্ধে কিরূপ ব্যবস্থ অবলম্বন করবেন, ভাবিতে লাগিলেন। তিনি দারোয়ানদের ডাকিয়া ইহাকে গ্রেপ্তার করবেন? একটা হৈ চৈ তুলিবেন? যে দুৰ্বত্ত র্তাহার ঐতিহাসিক মহামূল্য বস্তু অপহরণ করিয়াছে, তাহাকে পুলিসে দবেন? কিন্তু এই ঘটনা বহু বৎসর পূর্বে ঘটিয়াছিল। কে তাহার কথা বিশ্বাস করবে যে, একটা শিশু এই কাজ করিয়াছিল ? না। তাহার অপেক্ষা নীরবে সহ্য করাই শ্রেয়। তিনি কহিলেন, “তপন, তোমার রোম্যান্স সত্যই আনন্দদায়ক। আমি যে তা খুব ভালভাবে উপলব্ধি করেছি, এ বলাই বাহুল্য। কিন্তু তোমার ধারণা অনুযায়ী সেই ছেলের কথা এখন ললো। আমি আশা করি, সে এমন সহজে ধনী হবার পথ নিশ্চয়ই ত্যাগ করেনি।” “নিশ্চয়ই না।” তপন উত্তর দিল। কুমার কহিলেন, “শুনে খুশি হলুম।” তপন কহিল, “খুশি হবার কথাই যে! যে ছেলে সাত বৎসর বয়সে ঐতিহাসিক