পাতা:ম্যাডাম গেয়োঁ - নির্ঝরিণী ঘোষ.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S8V UN C ১৯এ মার্চ তাহার কারারক্ষিণী বিশেষ অনুগ্রহ করিয়া তাহাকে কনভেণ্ট সংলগ্ন উস্তানে যাইবার অনুমতি দিলেন। বাগানের নিভূত অংশে একটি উপাসনা স্থান ছিল। সেখানে খৃষ্টের ক্রুশবিদ্ধ মূৰ্ত্তি ছিল। তাহার সম্মুখে বসিয়া তিনি সমস্তদিন যাপন করিলেন। যে আনন্দে সেদিন তাহার হৃদয় আলোকিত হইয়া উঠিয়াছিল অন্যে তাহা বুঝিতে পরিবে না। ২৫-এ তারিখের অবস্থা সম্পূর্ণ বিপরীত। ঈশ্বর যেন সকল আনন্দ তাহার নিকট হইতে কাড়িয়া লইলেন। তঁহার এই নিঃসঙ্গ অবস্থা, কন্যার বিচ্ছেদ, তাহার সমস্ত পরাজয়, শরীরের স্বাস্থ্যহীনতা-সকলে আসিয়া তাহার সম্মুখে অন্ধকার লইয়া দাডাইল । সেই অন্ধকারে স্বৰ্গ মৰ্ত্ত্যের সকল আনন্দ তিনি হারাইয়া ফেলিলেন, হৃদয় গভীর দুঃখে মগ্ন হইয়া গেল। কিন্তু বিশ্বাসের আশ্ৰয় লইয়া অবশেষে এ পরীক্ষায়ও তিনি রক্ষা পাইলেন-অন্তরের প্রশান্ত আনন্দ আবার ফিরিয়া আসিল । তাহার মনে অত্যাচারীগণের প্রতি বিদ্বেষ বা অভিযোগের লেশ মাত্র ছিল না। তাহারা যাহা করিতেছেন ঈশ্বরই সে সমস্ত করিতে দিতেছেন-এই চিন্তাই তাহার পক্ষে যথেষ্ট । মানুষের আঘাতের মধ্যে ভগবানের ইচ্ছার অনুমোদন দেখিতে পারিলে আঘাতকারীর সম্বন্ধে আমাদের মন একটুও চঞ্চল হয় না, সে আঘাতে বেদনার একটি আনন্দে মন নত হইয়া পড়ে। কন্যাকে কোথায় রাখা হইয়াছে অনেকদিন পৰ্য্যন্ত সে সংবাদটিও তাহাকে দেওয়া হয় নাই। কিছুদিন পরে শুনিলেন এই বালিকাবয়সে তাঁহার কন্যাকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করিবার দুশ্চেষ্টা চলিতেছে । এই বালিকা পৈত্রিক সম্পত্তির বিপুল অংশের অধিকারিণী, সুতরাং অর্থলোভ এই স্বার্থপর আয়োজনের এক কারণ।