পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

છે છે.૨ যশোহর-খুলনার ইতিহাস শিখিতে হইল। তাহার বিদ্যাবত্তার কোন বিশিষ্ট-পরিচয় পাওয়া যায় না বটে, কিন্তু তিনি সংস্কৃত তান্ত্রিক স্তবাদি অতি সুন্দর আবৃত্তি করিতেন, ফারসীতে পত্র লিখিতে ও সুন্দরভাবে কথা কহিতে পারিতেন, নানাবিধ প্রাদেশিক বাঙ্গালায় সকল জাতীয় সৈন্তগণের সহিত কথা কহিতেন, ইহার পরিচয় আছে। গোবিন্দ দাসের সহিত তাহার সম্প্রীতির কথা পূৰ্ব্বে বলিয়াছি, আগ্রারবারে সমস্তাপূরণ ও নিজের সভাপণ্ডিতগণের সহিত সদালাপ ও শাস্ত্র চর্চার কথা পরে বলিব। কিন্তু সে যাহাই হউক, এই সব শিক্ষায় তাহার তত মতি ছিল না ; তিনি স্বাভাবিক প্রতিভার ফলে শাস্ত্র অপেক্ষ শস্ত্র-শিক্ষারই অধিক পক্ষপাতী ছিলেন। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকের অভাব ও ছিল না ; পাঠান রাজ্যের ধ্বংসের সময় বহু কৰ্ম্মক্লাস্ত পাঠানবীর যশোর-রাজ্যে আশ্রয় লইয়াছিলেন। তাহারা সকলেই উৎকৃষ্ট শিক্ষক এবং সৰ্ব্বাপেক্ষা ভাল শিক্ষক ছিলেন বসন্তরায় স্বয়ং। সেই মসীজীবী কায়স্থ সন্তান বহুদিনের সাধনার ফলে যখন অসিহস্তে দণ্ডায়মান হইতেন, তখন সহজে কোন বীর তীহার সখীন হইতে সাহসী হইত না । প্রতাপ তাহার উপযুক্ত শিস্য ছিলেন এবং শিষ্যের মৰ্ম্মও গুরু বুঝিয়াছিলেন। উদীয়মান যুবকের, অদম্য উদ্যম ও লোক-পরিচালনার ক্ষমতা দেখিয়া দূরদর্শী বসন্তুরায় প্রতাপের নিকট অনেক আশা করিতেন, এবং অগ্রজের মত তাহার প্রতি সন্দিগ্ধ না হইয়া প্রকৃতই ভ্রাতুষ্পুত্রের মত তাহার প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। প্রতাপকে তিনি আশ্রয় দিতেন, প্রশ্রয় দিতেন এবং আশার আলোক দেখাইতেন। কিন্তু ভাগ্যদোষে প্রতাপ তাহা বুঝিতেন না ; বাহিরে যাহাই হউক, ভিতরে প্রতাপ চিরদিনই খুড়ার কথায় ও কাষে সন্দেহযুক্ত ছিলেন। কিন্তু এই খুড়াই ভাছার পিতার মত পিতা। ভাগ্যের দোষ শুধু প্রতাপের নহে, সমগ্র বঙ্গের ভাগ্যদোষে, প্রতাপ হঠাৎ তাহার হত্যাসাধন করির পিতৃঘাতীর ফল সপ্রমাণ করিয়াছিলেন । - প্রতাপের রাজোচিত বিপুল শরীর ছিল। মল্লযুদ্ধে, তীরসঞ্চালনে, তরবারি তাড়নায় তিনি অতুলনীয় ছিলেন। মহারাজ বিক্রমাদিত্য তাহার ঔদ্ধত্যে বিরক্ত হইলেও তাহার বীরত্বে বাধা দিতেন বলিয়া মনে হয় না। দায়ুদ শাহ ইঞ্জিয়াসক্ত হইলেও কাৰ্য্যক্ষেত্রে বীরের মত বীর ছিলেন, এজন্ত মোগলের পক্ষে তাহাকে