বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:যশোহর-খুল্‌নার ইতিহাস দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৪১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৫২ যশোহর-খুলনার ইতিহাস প্রতাপের সৈন্ত কম এবং যুদ্ধ ব্যতীত বিশ্বাসঘাতকতার জন্যও তাছা কমিতেছিল। প্রতাপ জিতিয়া জিতিয়া হারিতেছিলেন, মানসিংহ প্রথমতঃ হারিলেও নিত্য মূর্তন স্বান দখল করিয়া অগ্রসর হইতেছিলেন। মানসিংহ প্রতাপকে চিনিতেন এবং অত্যন্ত ভালবাসিতেন। উড়িষ্যাভিযানে প্রতাপের বীরত্বের কথা তাহার মনে ছিল। তিনি যশোহরের যুদ্ধে বঙ্গীয় বীরের অসাধারণ সমর-কৌশল দেখিয়া মুগ্ধ হইয়াছিলেন। তিনি নিজে মহাবীর, বীরের মহত্ত্ব বুঝিতেন। যুদ্ধান্তে তিনি জয়লাভ করিলেও বীরত্বের সম্মান রাখিবার জন্য প্রতাপাদিত্যর সহিত সন্ধি করিলেন। তিনি মিবারাধিপতি প্রতাপসিংহের সহিত সন্ধিস্থাপনের জষ্ঠ কত চেষ্টাই করিয়াছিলেন, কিন্তু চেষ্টা সফল হয় নাই। স্বদেশ সেবাব্রত প্রতাপাদিত্যকে তিনি খাচায় পুরিয়া লইয়া গেলে, বাস্তবিকই রাজপুত-চরিত্রের অবমাননা করা হইত। তাহ। তিনি কবেন নাই; কিন্তু তবুও কলঙ্কের ডালি কেন তাহার স্বন্ধে চাপিল, তাহ কিছুতেই খোজ করিয়া বাহির করিতে পারিলাম না । সকল তথ্যের সার সংগ্ৰহ করিয়া আমরা এই যুদ্ধের ফলাফল সম্বন্ধে নিম্ন লিখিত সংক্ষিপ্ত বিবরণী দিতে পারি। কয়েক দিন ধরিয়া নানা স্থানে কয়েকটি যুদ্ধ হয় বটে, কিন্তু তন্মধ্যে আমরা তিন দিনের যুদ্ধ উল্লেখ করিতে পারি। প্রথম যুদ্ধ বসন্তপুরের সন্নিকটে হয়, উহাতে জয় পরাজয় স্থির হয় না। উভয় পক্ষের বহু সৈন্ত ধ্বংস হয় । দ্বিতীয় দিনও উহারই সন্নিকটে ভীষণ যুদ্ধ। এই যুদ্ধই সৰ্ব্ব প্রধান ; ইহাতে সম্ভবতঃ স্বৰ্ষাকান্ত ও মদন মল্প প্রভৃতি নিহত এবং শঙ্কর আহত অবস্থায় ধৃত হন। এই যুদ্ধে মানসিংহ জয়লাভ করিয়া পরদিন মুকুন্দপুরের দুর্গ অধিকার করিয়া লন। তখন সন্ধির প্রস্তাব করিলেও প্রতাপাদিত্য স্বীকৃত হন নাই, এজষ্ঠ মোগল সৈন্ত দ্রুতবেগে কুচ করিয়া ধুমঘাটের অপর পারে উপস্থিত হয়। সেখানে তৃতীয় যুদ্ধ হয়। এযুদ্ধে মোগলদিগের বহু ওমরাহ নিহত হন, তন্মধ্যে মামুদ অন্যতম। সম্ভবতঃ তাহারই নামানুসারে স্থানটির নাম মামুদপুর রাখা হয়। প্রতাপ-পক্ষেও ফিরিঙ্গি রড প্রভৃতি বিখ্যাত যোদ্ধা এই যুদ্ধে কালগ্রাসে পতিত হন। প্রতাপ এই যুদ্ধে পরাজিত হইয়া, মানসিংহের সহিত সন্ধি করেন। তখন ওমরাহদিগের শবদেহ টেঙ্গ মসজিদের পার্থে লইয়া সমাহিত করা ছয়। সন্ধি হওয়ার পর “সিংহ