পাতা:য়ুরোপ-প্রবাসীর পত্র-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পত্র: পাদটীকা





১২৩

    চেষ্টা বৃথা হইবে, তবে আর-একজন বলিবে পূর্বোক্ত চেষ্টাও বৃখা হইবে; প্রকৃত কথা এই যে দুই চেষ্টারই ফলের আশা এত অল্প যে, আমাদের ভাগ্যে উভয়ই এক প্রকার দুরাশা; কিন্তু যদি ‘যত্নে কৃতে যদি ন সিদ্ধাতি কোহত্র দোষঃ’ এই ভাবিয়া কোমর বাঁধিয়া চেষ্টা করিতে হয় তবে শেষোক্ত প্রকারের চেষ্টাই সর্বতোভাবেই শ্রেয়। ভা স.

    আন্দোলন যাহাতে রীতিমত হয় অর্থাৎ এক-দিক-ঘেঁষা না হয় এই জন্যই বর্তমান প্রস্তাবটির পদে পদে টিপ্পনী-সংযোগের এত আয়াস পাওয়া যাইতেছে। ভা. স.

    রামমোহন রায়ের কথা ছাড়িয়া দেওয়া হোক— তিনি যেরূপ দেশীয় আকারে ব্রাহ্মধর্ম প্রচার করিয়াছেন, স্ত্রীস্বাধীনতা সে ভাবে প্রচারিত হইলে আমরা তো বাচিয়া ষাই— কিন্তু এ তো তা নয়— এ হচ্ছে বিবিদের গৌনের আঁচল ধরিয়া চলা, আয়া-গিরি করা। বোম্বাই দেশেও তো স্ত্রীস্বাধীনতা আছে— স্বাধীন যুক্তি ও রুচি -সহকারে স্ত্রীস্বাধীনতার ভালো একটা আদর্শ দাঁড় করাও, তাহা আমরা মাথায় করিয়া লইব; কিন্তু তাহা বলিয়া স্ত্রীস্বাধীনতার নামের খাতিরে তাহার একটা অন্তঃসারশূন্য চিকন-চাকন আদর্শকে ‘এই উচ্ছিষ্টই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট’ বলিয়া গলাধঃকরণ করিতে পারি না। ভা.স.

    একজন পর-মানুষ কিছু দোষ করে নাই বলিয়া তাহার সহিত আত্মীয়স্বজনের মতো ব্যবহার করিতে হইবে, তাহাকে ঘরের স্ত্রীলোকদিগের সহিত মেলা-মেশা করিতে দিতে হইবে, ইহা কোন্ ইংরাজি আইনে পাওয়া যায়? ভা.স.

    লেখকের মত এই যে, যেমন পুরুষে পুরুষে আমোদ-প্রমোদে মেলামেশা নিষ্কণ্টকে চলিতে পারে, পরপুরুষে পরস্ত্রীতেও তাহা তেমনিই নিষ্কণ্টকে চলিতে পারে। কিন্তু, কাজে কী দেখা যায়? দুইজন পুরুষমানুষের মধ্যে যতই কেন বন্ধুতা ও ঘনিষ্ঠতার মাত্রা বাড়ুক-না তাহাতে বিশেষ কাহারও কিছু আইসে যায় না; কিন্তু পরস্ত্রী এবং পরপুরুষের মধ্যে নির্দোষ বন্ধুতার মাত্রা বাড়িলে অনেকেরই তাহা শঙ্কার বিষয় হয় কেন? ইংরাজ-সমাজের বিধানানুসারে