বাঙালি বলে একটা পদার্থ ক্রমে বেঙ্গো।—অ্যাঙ্গিক্যান কিম্বা ইঙ্গবঙ্গ নামে একটা খিচুড়িতে পরিণত হয়। আমি অতি সংক্ষেপে তার বর্ণনা করেছি, সমস্ত প্রক্রিয়াটি বিস্তারিত করে লিখতে পারি নি। আমি তার বড়ো বড়ো দুই-একটা কারণ দেখিয়েছি, কিন্তু এত-সব ছোটো ছোটো বিষয়ের সমষ্টি মানুষের মনে অলক্ষিত পরিবর্তন উপস্থিত করে যে, সে-সকল খুঁটিনাটি করে বর্ণনা করতে গেলে আমার পুঁথি বেড়ে যায় আর তোমাদের ধৈর্যও কমে যায়। সুতরাং এইখানেই সে-সকল বর্ণনা সমাপ্ত করা যাক।
এখন মনে করো, এক বৎসর বিলেতে থেকে বাঙালি তাঁর দেহের ও মনের প্রথম খোলস পরিত্যাগ করেছেন ও হ্যাট-কোট পরিধান করে দ্বিজত্ব প্রাপ্ত হয়েছেন ও মনে মনে কল্পনা করছেন যে, এতদিনে তিনি গুটিপোকাত্ব ত্যাগ করে প্রজাপতিত্বে উপস্থিত হয়েছেন। এই অবস্থায় তাঁকে একবার আলোচনা করে দেখা যাক। আমি দেখতে পাচ্ছি তুমি মহা চটে উঠেছ; তুমি বলছ, ‘বিলেতে গিয়ে বাঙালিদের বর্ণনা করতে বসাও যা আর গোলকুণ্ডায় গিয়ে রানীগঞ্জের পাথুরে কয়লার বিষয় লেখাও তাই।’ কিন্তু স্থির হও. আমি তোমাকে কারণ দেখাচ্ছি। আমি তোমার গা ছুঁয়ে বলতে পারি, বিলাতী বাঙালির চেয়ে নতুন দ্রব্য বিলেতে খুব কম আছে। ইংরাজ ও আঙ্গ্লো-ইন্ডিয়ান যেমন দুই স্বতন্ত্র জাত, বাঙালি ও ইঙ্গবঙ্গও তেমনি দুই স্বতন্ত্র জীব। এই জন্য ইঙ্গবঙ্গদের বিষয়ে তোমাদের যত নতুন কথা ও নতুন খবর দিতে পারব, এমন বিলেতের আর খুব কম জিনিসের উপর দিতে পারব। ইঙ্গবঙ্গদের সংখ্যা এত সামান্য যে তুমি মনে করতে পারে।, আমি ব্যক্তিবিশেষদের উপর কটাক্ষ করে বলছি। কিন্তু তা নয়— আমি ইঙ্গবঙ্গ দলের একটা সাধারণ আদর্শ কল্পনা করে নিয়েছি, আমার