পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আঠারো

 কিছুকাল আগে শ্রীরাজশেখর বসু মত প্রকাশ করেছিলেন, ‘সিনেমাওয়ালীরা দেবীর জাত মেরে দিয়েছে।’ আজকাল সাধারণ রঙ্গালয়ের কোন কোন অনধিকারিণীকেও দেবীত্বের উপরে এমনি দাবি করতে দেখা যাচ্ছে। তারাসুন্দরীও সমাজ-বহির্ভূত সমাজের কন্যা, কিন্তু ‘দেবী’ পদবীর উপরে দাবি করেন নি কোনদিন। ব্যবহার করতেন ‘দাসী’ পদবীই।

 কিন্তু প্রকৃত শিল্পীর তো জাত-বেজাত নেই। ব্যক্তিগত জীবনে সামাজিক সম্মান থেকে বঞ্চিত হ’লেও, নিজের নিজের ধ্যানের জগতে তাঁরা যখন সমাহিত হয়ে থাকেন, তখন তাঁদের অভিনন্দন দেন গোঁড়া সমাজপতিরাও, তখন তাঁদের ললাটের উপরে পবিত্র করকমল স্থাপন করেন কামিনী-কাঞ্চন-ত্যাগী পরমহংসদেবও।

 বিপিনচন্দ্র পালের প্রসঙ্গে আগেই বলেছি, তারাসুন্দরীর অসামান্য নাট্যনৈপুণ্য দেখে মুগ্ধ হয়ে তিনি স্বসস্পাদিত ইংরেজী মাসিক পত্রিকার জন্যে তাঁর প্রতিভা সম্পর্কে একটি প্রশস্তিপূর্ণ সচিত্র প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন।

 কবিবর সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত একাধিকবার আমাদের কাছে বলেছিলেন, ‘তারাসুন্দরীর আশ্চর্য প্রতিভা। ওঁর ওপরে একটি কবিতা রচনার ইচ্ছা আছে।’ কিন্তু তাঁর সে ইচ্ছা পূর্ণ হয় নি, হঠাৎ অকালেই তাঁকে মহাপ্রস্থান করতে হয়েছিল।

 বালক বয়সেই তারাসুন্দরীর নামের সঙ্গে পরিচিত হয়েছিলুম বটে, কিন্তু তাঁর অভিনেত্রীরূপ দেখবার আগেই আমি পেয়েছিলুম

১৩৬