পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৩৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

কাব্যরসে বঞ্চিত হ’লে তাঁরা প্রকাশ করতে পারেন না কোন সৌন্দর্যই। তারাসুন্দরী তা বিশেষ ভাবেই পেরেছেন, কারণ নিজেও ছিলেন তিনি কবি।

 অসংখ্য নাটকে আমি তারাসুন্দরীর অভিনয় দেখে অভিভূত হয়েছি, কিন্তু এখানে একে একে প্রত্যেক ভূমিকার নামের তালিকা দাখিল ক’রে লাভ নেই। তবে আমার মনের মধ্যে বিশেষ ক’রে স্থায়ী রেখাপাত করেছে এই ভূমিকাগুলি: রিজিয়া, আয়েসা (দুর্গেশনন্দিনী), কল্যাণী (প্রতাপাদিত্য), জহরা (সিরাজদ্দৌলা), শৈবলিনী (চন্দ্রশেখর), জাহানারা (সাজাহান), গুলনেয়ার (দুর্গাদাস), ধারা (রাখীবন্ধন), বেগম (অযোধ্যার বেগম), জনা ও উৎপল (কিন্নরী)।

 শেষোক্ত ভূমিকা সম্বন্ধে দুই-চার কথা বললে মন্দ হবে না। ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের অন্যান্য রচনার সঙ্গে তুলনা করলে “কিন্নরী”র প্রশংসা করা যায় না। কিন্তু গ্যালারির দেবতাদের লীলাখেলা বোঝা দায়। ক্ষীরোদপ্রসাদের কোন কোন উৎকৃষ্ট নাটক তাদের মনে ধরে নি, অথচ “কিন্নরী” দেখবার জন্যে মিনার্ভা থিয়েটারের প্রেক্ষাগৃহে ভিড় ভেঙে পড়তে লাগল! পালাটির আগাগোড়া ছেলেমানুষিতে ভরা হ’লেও তার দুটি ভূমিকা— উৎপল ও মকরী— ছিল প্রধান আকর্ষণ। আলিবাবার হুসেন ও মর্জিনার মত তাদেরও নাচ-গান ও হাসির কথা দর্শকরা অত্যন্ত উপভোগ করত। উৎপল ও মকরীর ভূমিকা গ্রহণ করতেন যথাক্রমে নৃপেন্দ্রচন্দ্র বসু ও চারুশীলা। “কিন্নরী”র জনপ্রিয়তা যখন খানিকটা নিম্নমুখী হয়ে পড়েছে, তখন হঠাৎ নৃপেন্দ্রচন্দ্র “মিনার্ভা”র সংস্রব ত্যাগ করলেন।

 এবং তারাসুন্দরী পুরুষ বেশে গ্রহণ করলেন উৎপলের ভূমিকা।

১৩৮