পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এক

 এখনকার বুড়োরা হয়তো মনোমোহন বসুকে চিনতে পারবেন, কিন্তু এখনকার ছেলেরা বোধ হয় তাঁর পরিচয় জানেন না। এজন্যে ছেলেদের দোষ দিই না, প্রধানতঃ এজন্যে দায়ী হচ্ছেন সাহিত্যিকরা, কারণ অতীতের স্মরণীয় নামগুলিকে তাঁরা লোকের চোখের সামনে জাগিয়ে রাখবার চেষ্টা করেন না।

 আধুনিক বাংলা সাহিত্যের আদর্শ এসেছে ইংলণ্ড থেকে। কিন্তু বাঙালীদের মত ইংরেজরাও সাহিত্য ও আর্টের নানা বিভাগে যাঁরা অতুলনীয় প্রাধান্য বিস্তার করেছেন, কেবল তাঁদের নিয়েই সর্বদা বড় বড় কথা বলেন না, উল্লেখযোগ্য অপ্রধান কর্মীদের জন্যেও এমন খানিকটা জায়গা ক’রে রাখেন যে, তাঁদের নাম অতীতের অন্ধকারে মিলিয়ে যেতে পারে না। দৃষ্টান্তস্বরূপ ইংরেজ কবি, টমাস গ্রের নাম উল্লেখ করা যায়। তাঁর রচনার পরিমাণ যৎ-সামান্য। কিন্তু যে ইংরেজী ভাষা শেখে, সেই-ই তাঁর নামের সঙ্গে পরিচিত হয়— এমন কি বিদ্যালয়ের নিম্নশ্রেণীর ছাত্রেরা পর্যন্ত। কিন্তু সাধারণ বাঙালীদের জিজ্ঞাসা করুন দেখি—‘গোবিন্দচন্দ্র রায়, কে?’ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উত্তর পাবেন, ‘জানি না।’

 মনোমোহন বসুকেও এর মধ্যেই আমরা ভুলতে বসেছি, অথচ, আমাদের নাট্য-সাহিত্যে তিনি অপ্রধান ভূমিকাগ্রহণ করেন নি। যাঁরা বাংলা নাট্য-সাহিত্যের ভিত্তিস্থাপন করেছিলেন, সেই রামনারায়ণ তর্করত্ন, কালীপ্রসন্ন সিংহ, মাইকেল মধুসূদন ও দীনবন্ধু মিত্রের সঙ্গে তিনিও ছিলেন একজন প্রধান কর্মী। এদেশে সাধারণ

১৪