পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

বনাম শিবদাসের খেলা! আচম্বিতে শিবদাসের পদ ত্যাগ ক’রে একটি বল উল্কাবেগে ছুটে গেল ইষ্ট ইয়র্কেয় গোলের দিকে এবং তখনকার সর্বশ্রেষ্ঠ গোলকিপার ক্রেসী তাকে স্পর্শ পর্যন্ত করতে পারলেন না।

 গোল! গো-ওল্! গো-ও-ও-ল্! বিশাল জনসাগরের সেই গগনভেদী কোলাহল গঙ্গার ওপার থেকেও শোনা গিয়েছিল। আমার পাশের গাছের একটা উঁচু লম্বা ডালে মাথার উপরকার আর একটা ডাল ধ’রে শাখামৃগের মত সারি সারি ব’সেছিল দশ-বারোজন লোক। উত্তেজনায় আত্মবিস্মৃত হয়ে উপরকার ডাল ছেড়ে তারা দুই হাতে তালি দিতে গেল এবং সঙ্গে সঙ্গে ঝুপ্‌ ঝুপ্ ক’রে মাটির উপরে গিয়ে অবতীর্ণ হ’ল সশব্দে! তাদের আর্তনাদ শুনতে শুনতে সভয়ে আমি কোঁচা খুলে গাছের গুঁড়ির সঙ্গে নিজের দেহকে বেঁধে ফেললুম। কি জানি বাবা, বলা তো যায় না, আমারও যদি দৈবাৎ হাততালি দেবার সখ হয়!

 মায়াবী শিবদাসের ইন্দ্রজাল তখনও শ্রান্ত হয় নি, তখনও তিনি বল নিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটোছুটি করছেন এখানে ওখানে যেখানে সেখানে! রীতিমত মস্তিষ্কচালনার সঙ্গে সঙ্গে পদচালনা না করলে সে-রকম খেলা কেউ খেলতে পারে না। প্রতিপক্ষদের দশাসই চেহারাগুলো কিছুতেই তাঁর ক্ষিপ্রগামী ছিপ্‌ছিপে দেহের নাগাল ধরতে পারছে না—যেন তিনি আলেয়া! আবার তিনি হ’লেন গোলের নিকটবর্তী, একজন প্রতিযোগী বাঘের মত তাঁর সামনে এসে পড়ল, কিন্তু তিনি টুক্ ক’রে বলটি তুলে দিলেন নিজেদের ‘সেণ্টার-ফরোয়ার্ড’ অভিলাষের পায়ের উপরে এবং অভিলাষও কিছুমাত্র ভুল করলেন না!

 আবার ইংরেজদের কাণে ভয়াবহ সেই হাজার হাজার কণ্ঠের

১৫৫