পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

 —‘আজ্ঞে, আপনার নাটক আর অভিনয় দেখলেই বোঝা যায় আপনার ভিতরে আছে আসল মানুষটি।’

 তিনি কিছু বললেন না, তাঁর ওষ্ঠাধরে ফুটেই মিলিয়ে গেল একটি ক্ষীণ হাসির রেখা।

 অল্পক্ষণের নীরবতা। ঘরের ভিতরে প্রবেশ করলেন একটি ভদ্রলোক। বললেন, ‘আমার স্ত্রীর হাতে একটি ফোড়া হয়েছে, একটা ওষুধ দিন।’ (পরে শুনেছি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় গিরিশচন্দ্রের অসামান্য হাতযশ ছিল)।

 গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘জলপটি লাগাও।’

 ভদ্রলোক খুঁত খুঁত ক’রে বললেন, ‘কোন ওষুধ দেবেন না? খালি জলপটিতে কি কাজ হবে?’

 গিরিশচন্দ্র বললেন— সেই মৃদুকণ্ঠেই, ‘জলপটি অত্যন্ত উপকারী। লোকে এর কদর বোঝে না। অনেক সময়ে বড় বড় ওষুধের চেয়েও জলপটিতে বেশী কাজ পাওয়া যায়। আগে জলপটি দিয়ে দেখ, তারপর দরকার হ’লে অন্য ব্যবস্থা করা যাবে।’

 ভদ্রলোকের প্রস্থান। দুইজন যুবকের প্রবেশ। বয়সে আমার চেয়ে বেশী বড় নয়। হাতে খুব বড় একখানা খাতা— বোধ হয় পাণ্ডুলিপি।

 খাতাখানার দিকে সন্দিগ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ ক’রে গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘কি চাই বাবা?’

 একটি যুবক বললেন, ‘একখানা নাটক লিখেছি। আপনাকে শোনাতে এসেছি।’

 ভাবহীন মুখে গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘খানিকটা পড় তো শুনি।’

 যুবক সাগ্রহে পাণ্ডুলিপি পাঠ করতে বসলেন। মিনিট দশেক শোনবার পর গিরিশচন্দ্র বললেন, ‘বাবা, নাটক রচনা করবার

২৫