পাতা:যাঁদের দেখেছি - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
যাঁদের দেখেছি

বাইরে চ’লে গিয়েছিল। আপনি ঐ ঐতিহাসিক তথ্যটিকে দেখিয়ে দিয়ে ভালো কাজ করেছেন। নাটক আর ইতিহাস এক নয়। ইতিহাসকে হুবহু অনুসরণ করলে সংলাপে-গাঁথা ইতিহাস হ’তে পারে, কিন্তু নাটক হবে না। ঘটনা-সংস্থান, চরিত্রসৃষ্টি আর ‘ড্রামাটিক অ্যাকসানে’র জন্যে নাট্যকার যদি ইতিহাসের গণ্ডীর ভিতরে থেকেও কিছু কিছু পরিবর্তন আর পরিবর্জনের সাহায্য না নেন, তা’হলে শ্রেষ্ঠ লেখকও ভালো নাটক লিখতে পারবেন না। সেক্সপিয়ার তাই করেছেন, আর সকলেও তাই করেছেন, আমিই বা তা করব না কেন?’

 “সুরধামে”র “লনে” চেয়ারের উপরে ব’সে ব’সে কথাবার্তা হচ্ছিল। একে একে দ্বিজেন্দ্রলালের বন্ধুরা আসতে লাগলেন। প্রথমে এলেন নাট্যকার দীনবন্ধুর পুত্র স্বর্গীয় ললিতচন্দ্র মিত্র, তারপর এলেন কবি ও প্রবন্ধকার স্বর্গীয় বিজয়চন্দ্র মজুমদার, তারপর এলেন লাখুটিয়ার জমিদার কবি দেবকুমার রায়-চৌধুরী। আমি বিদায় গ্রহণ করলুম।

 আসবার সময়ে দ্বিজেন্দ্রলাল বললেন, ‘হেমেন্দ্রবাবু, আপনি আমার ভক্ত জেনে সুখী হয়েছি। পারেন তো মাঝে মাঝে আসবেন।’

 তা মাঝে মাঝে যেতুম বৈকি! সে ছিল এক চমৎকার বৈঠক, সন্ধ্যার পর সেখানে এসে জুটতেন তখনকার যত বড় বড় নাম-করা সাহিত্যিক এবং তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ছিলেন মধুলোভী মধুকরের মত। উপমাটির অপপ্রয়োগ হয় নি, কারণ কোন কোন সাহিত্যিক ছিলেন দ্রাক্ষাদেবীর অনুগত উপাসক এবং দ্বিজেন্দ্রলাল যেমন পরিচিত অপরিচিত সকলেরই সামনে অবাধে অসঙ্কোচে সুরাপান করতেন, তেমনি আঙ্গুরবালার ভক্তদের

৪৬