পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वाढ }08 মায়ের মৃতদেহের চেয়েও তার কাছে বেশী কৌতুহলের বিষয় হয়েচে চারিধারে এই গোলমাল ও অদৃষ্টপূর্ব লোকের ভিড়। একটু পরে সাহেব ক্টেশন মাষ্টার ও তার সঙ্গে একজন ভদ্রলোক এলেন । বুঝতে দেরী হোল না যে ভদ্রলোকটি ডাক্তার, তিনি বৌটির নাড়ী দেখলেন, চোখ দেখলেন, ষ্ট্রেশন মাষ্টারের সঙ্গে কি কথা হোল তার, স্বামীটির সঙ্গেও কি যেন বল্পেনা তারপর তারা চলে গেলেন । মৃত্যুই তা হোলে ঠিক !••• কৌতুহলী জনতা আরও খানিকক্ষণ তাদের ঘিরে দাড়িয়ে রৈল-মূতা পল্পীবধু, তার শোকস্তব্ধ স্বামী, অবোধ ক্ষুদ্র পুত্র ও তাদের ঘর গৃহস্থালীর সাধের দ্রব্যাদি । তারপর একে একে যে যার কাজে চলে গেল-আরও নতুন দল এলতারাও খানিকটা থেকে নিজেদের মধ্যে কি বলাবলি কৰ্ত্তে কৰ্ত্তে ফিরে গেল । এবার এল রেলওয়ে পুলিশের লোক, তারা খানিকক্ষণ ধরে ভদ্রলোকটিকে কি সব প্রশ্ন কল্পের্ব নোটবুকে কি টুকে নিলে-তারপর তারাও চলে গেল--কেবল একজন কনষ্টেবল একটু দূরে দাড়িয়ে রৈল। এ সবে কাটল প্ৰায় এক ঘণ্টা ! তখন সন্ধ্যে প্ৰায় হয়-হয় । ষ্টেশনের আলো জ্বালিয়েচে, আপ ডাউন দুদিকের সিগন্যালে লাল সবুজ বাতির সারি জলেচে ; কিন্তু তখনও অন্ধকার হয় নি, সিগন্যালের পাখা তখনও স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল, আপ লাইনের হোম ষ্টার্টার নামানো-বোধ হয় কোনো ট্ৰেণ আসচে। যা হবার তা তো হয়ে গিয়েচে এখন সৎকারের ব্যবস্থা ? এ ধরণের প্রশ্ন কেউ ভদ্রলোকটিকেও কল্পের্ক না-তিনিও কাউকে কল্পেনি না। এদিকে ভিড় ক্ৰমেই পাতলা হয়ে এল-অনেকেই আপ ট্রেণের যাত্রী-কলকাতার দিকে দুখানা সিগন্যাল নামানো দেখে তারা ওভার ব্রিজ দিয়ে উঠি-পড়ি অবস্থায় ছুটলো আপ প্ল্যাটফৰ্ম্মের দিকে। এটা যে খুট্ৰেণ আসচে, তা ভেবে তখন কে দেখে ? ভিড়ের