পাতা:যাত্রাবদল - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

श्यां ܓ݁ܶܠܕܽ গুজব, সংসারের বাজার হাট করানোর ব্যবস্থা করা-দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বৎসরের পর বৎসর একঘেয়ে, এক রকম জীবন ধারা, বৈচিত্ৰ্য নাই, পরিাবৰ্ত্তন নাই, নতুনতর অনুভূতির কোনো আসিবার পথ নাই কোনো দিক দিয়া । কিন্তু সতীশ এ বিষয়ে খুব সচেতন নয়, জীবনে তেমন আর আনন্দ নাই, এ কথা এক অধিবার তাহার মনে যে না উঠিয়াছে এমন নয় -কিন্তু এ লইয়া ভাবিতে সে বসে নাই কখনো, ভাবিবার সময়ও পায় নাই । কিন্তু ক্ৰমে এ কথাটা তাহার মনের মধ্যে উকি মারিতে লাগিল। হয়তো নিস্তব্ধ দুপুরে বিলের পাশের পথ দিয়া গরুর গাড়ীতে আরামে সে ভিন গাঁয়ে রোগী দেখিতে চলিয়াছে। মাঠের ধারে ধারে ঘুঘু পাখীর ডাকে কিম্বা বিলের গভীর জলে বাগদী ছেলেকে ডোঙা চড়িয়া মাছ ধরিবার দৃশ্যে-সে দেখিত সে হঠাৎ অন্যমনস্ক হইয়া কাশীতে যাপিত বাল্যজীবনের কথা ভাবিতেছে- রাম রাম সাহু হালুইকরের দোকানে লছমী বলিয়া সেই মেয়েটি থাকিত-এতকাল পরেও তার সে গলার সুমিষ্ট সুরা যেন প্ৰাণে লাগিয়া আছে- একবার সে, রামজীবনবাবুর বড় ছেলে বাদল, তার ভাগ্নে নরু-তিনজনে জঙ্গম বাড়ীর বাবোয়ারী আসরে সিদ্ধি খাইয়া কি কাণ্ডটাই করিয়াছিল । • • • নেপালে একবার কর্ণেল খড়গ সমসের জঙ্গ রাণা বাহাদুরের কন্যার বিবাহেতে নিমন্ত্রিত হইয়া গিয়াছিল। গিয়া দেখিল খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা নাই-একটা মোড়কের মধ্যে মসলা ও সুপারি। আর একটা মোড়কে পাচটি টাকা । সতীশ কৰ্ণেল বাহাদুরের দেওয়ানকে বলিল-টাকা কিসের ? নিমন্ত্রিত হয়ে এসে টাকা নেওয়া আমরা অপমানজনক মনে করি । দেওয়ান বলিল-এখানে এই নিয়ম | না নিলে কৰ্ণেল চটুতে পারেন। সতীশ রাগ করিয়া বলিল -চ’টে আমার কি করবেন। তিনি ? চাকরি নেবেন ? নিন-আমি এখুনি ইস্তফা দিতে রাজি আছি, টাকা কখনই নিতে পারবো না।