পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98 যুগান্তর । “কৃষ্ণকামিনী ; বড় হইয়া গেল, এখন বিধবার আচার করাই উচিত।” এত দিনের পর সেই সংকল্পটা কাৰ্য্যে পরিণত করিতে অগ্রসর হইয়াছিলেন এই মাত্র । যাহা হৌক তিনি সমস্ত দিন মনের যন্ত্রণায় কাল কাটাইয়া অবশেষে স্থির করিলেন যে, আপীস হইতে ফিরিবার সময় কৃষ্ণকামিনীকে দুইটী মিষ্ট কথা বলিয়া যাইবেন । ব্রজরাজ ও মথুরেশ আপীস হইতে আসিয়া সমুদায় বৃত্তান্ত শুনিয়া একেবারে আগুন হইয়া গেলেন। পূৰ্বাবধিই মাতুলের সঙ্গে তাহদের অনেক বিষয়ে মতভেদ উপস্থিত হইয়া মধ্যে মধ্যে তর্কবিতর্ক ও রাগারগি হইয়াছে। তঁহার এক্ষণে বয়ঃপ্রাপ্ত হইয়াছেন, মাতুল ষে এখনও তাহাদিগকে নাবালকের ন্যায় ব্যবহার করবেন, ইহা তাহাদের সহ্য হয় না। মথুরেশ বলিলেন, “একি জুলুম, একি অত্যাচার। এত বড় মেয়েকে এই প্ৰহাের । আসুন দেখি মামা, তঁর সঙ্গে আর কথা কব না । আমাদের এমন অভিভাবকের দরকার নেই ।” ব্ৰজরাজ জননীকে বলিলেন, “বল আর মামার বাড়ী যেতে চাবে না ?” দুই ভ্রাতাতে এইরূপ আক্রোশ প্ৰকাশ করিতেছেন, এমন সময়ে শ্যামচাঁদ মিত্ৰ মহাশয় আসিয়া উপস্থিত। তঁহাকে যেই দেখা, অমনি সকলে নিস্তব্ধ। অন্য দিন তিনি আসিলে সকলে যেমন আনন্দ প্ৰকাশ করে, আজ আর কেহই তাহা করিল না ; কাহারও মুখে প্ৰসন্নতার চিহ্ন নাই ; অভ্যর্থনাসুচক শব্দ নাই! কেনই বা থাকিবে ? মিত্ৰজ মহাশয় তাহাতে কিছুমাত্র বিরক্ত, দুঃখিত বা আশ্চৰ্য্যান্বিত হইলেন না। একেবারে নিজ ভগিনীর ঘরে গিয়া ভগিনী ও ভাগিনেয়াদ্বয়কে নিকটে ডাকিলেন ; এবং তঁহাদের নিকট অনেক ক্ষোভ প্ৰকাশ করিলেন। তাহাতে তঁহাদের মন কিঞ্চিৎ শান্তভাবে ধারণা করিল। অবশেষে তিনি কৃষ্ণকামিনীর ঘরে গেলেন । মনে করিয়াছিলেন, তাহারও নিকটে ক্ষোভ প্ৰকাশ করিবেন, সাত্মনার্থ