পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৩৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ত্ৰয়োবিংশ পরিচ্ছেদ গ্রীষ্মাবকাশের অন্তে নবীনচন্দ্ৰ সন্ত্রীক ফরিদপুরে উপস্থিত হইলেন। সহরের মধ্যে জনরব পড়িয়া গেল, হেড মাষ্টার বিধবা বিবাহ করিয়া সপরিবারে আসিয়াছেন। পাড়ার নিয়শ্রেণীর স্ত্রীলোকেরা দলে দলে কৃষ্ণকামিনীকে দেখিবার জন্য আসিতে লাগিল। সঙ্গরের ভদ্র গৃহস্থ গৃহের গৃহিণীরাও দাসী প্রেরণ করিয়া সংবাদ লাইতে লাগিলেন। যেই দেখিয়া যায়, সেই কৃষ্ণকামিনীর রূপ গুণের প্রশংসা করে। ওদিকে সহরের ভদ্রলোকদিগের মধ্যে ঘোর দলাদলি বাধিয়া গেল ! কতকগুলি লোক অতিশয় বিরোধী হইয়া দাড়াইলেন । র্তাহারা বলিতে লাগিলেন, -“বিবাহের কথা সর্বৈব মিথ্যা, কাশী হইতে স্ত্রীলোকটাকে সঙ্গে করিয়া আনিয়াছে।” র্যাহারা বিবাহ বলিয়া স্বীকার করিলেন, তাহারাও বিধবা-বিবাহ বলিয়া ঘূণা করিতে লাগিলেন। এই গোলমালে নবীনচন্দ্ৰ অগ্ৰে যে সকল কাৰ্য্য আরম্ভ করিয়াছিলেন, তাহার কিঞ্চিৎ ক্ষতি হইল। সৰ্ব্বাগ্রে ছেলেদের দলটি ভাঙ্গিয়া গেল। কর্তৃপক্ষগণ স্বীয় স্বীয় গৃহের বালকদিগকে হেড মাষ্টারের দলে থাকিতে নিষেধ করিয়া দিলেন। সুরাপাননিবারিণী সভাটীও এক প্রকার উঠিয়া গেল। যাহারা নবীনচন্দ্রের সহিত মিশিতেন, এরূপ দুই একজন সভ্য ব্যতীত আর সকলেই সভাতে আসা পরিত্যাগ করিলেন । বঙ্গভাষাসমালোচনী সভাটীর বিশেষ ক্ষতি হইল না ; কারণ তাছাতে যে কয়জন উৎসাহী লোক ছিলেন, তাহারা সকলেই নবীনচন্দ্রের সহিত প্ৰায় প্ৰতিদিন রাত্রে মিশিতেন, সুতরাং সকলেই প্রেমে আবদ্ধ ছিলেন। র্তাহারা পূর্বের ন্যায় স্কুল ঘরে আসিয়া পাঠাদি করিতে লাগিলেন।