পাতা:যুগান্তর - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R যুগান্তর সকলেই বলে, “ভাই এবারে ফসলটা যে হয়েছে, কি আর বলবো ?” চাষা-গ্রামে কি ব্যস্ততাই লাগিয়াছে! মাঠের দিকে চাও, চক্ষু জুড়াইয়া যাইবে । কোনও ক্ষেত্রে পীতাভ সুপরিপক্ক ধান্য সকল চতুৰ্দিক ব্যাপিয়া রহিয়াছে ; কোনও ক্ষেত্রে ধান কাটিয়া রাখিয়াছে ; কোনও ক্ষেত্রে কাটা ধান গোছ বঁাধিতেছে ; কোনও ক্ষেত্রে চাষার গান করিতেছে, আর ধান কাটিতেছে ; কোথাও বা ধান বহন করিতেছে। এখন গ্রামে একটা মজুর পাওয়া ভার। সকলেই বলে—“আর মশাই ধান কাটা পড়িয়াছে ” চাষাগ্রামের পাঠশালা বন্ধ, ধানকাটা পড়িয়াছে । অল্পবয়স্ক বালকবালিকার আবার ক্ষেত্রে কি করিবে ? কেন, তাহাদের কি কাজ নাই ? বাড়ীর বৃদ্ধাদের সহিত তাহার কাটা ক্ষেতের পরিত্যক্ত ধানের শিশ সমুদায় কুড়াইতেছে। ইন্দুরদিগের সঙ্গে এ বিষয়ে মানুষের বিবাদ । ইন্দুরেরা সমস্ত রাত্রি শিশ বহন করিয়া গৰ্ত্তের মধ্যে লইয়া যাইতেছে ; বালকবালিকারা দিবাভাগে সেই গৰ্ত্ত খুড়িয়া সেই শিশ বাহির করিয়া আনিতেছে । দরিদ্রদের নিকট এক একটী শিশের কি আব্দর । রাজারা বোধ হয় এত ব্যগ্ৰতা সহকারে হীরকের খনি খোড়ে না। বৃদ্ধারা বালক পালিকাদিগকে বলিতেছে—“দেখিস, ভাল করে খুজিস ; এক একটা শিশ এক একটি নক্ষি।” বাস্তবিক ধান্যের সহিত লক্ষ্মীর কিছু নিকট সম্বন্ধ আছে ; পৌষমাসে বোধ হয় লক্ষ্মী ধান্য-বাহনে জগতে আসেন ; এবার তা আসিয়াছেন; তাহাতে আর সন্দেহ নাই । এদিকে তর্কভূষণ মহাশয়ের বাড়ীর পশ্চিম দিকের গোলার প্রাঙ্গণে স্তুপাকার ধান আসিয়া পড়িয়াছে ও প্রতি ঘণ্টাতে আসিতেছে। একদিন প্রাতে তর্কভূষণ মহাশয় ছাত্ৰাদিগকে পড়াইতে বসিবার পূর্বে গোয়ালবাড়ীতে একবার প্রবেশ করিয়াছেন। একটী ভৃত্য কয়েকদিন হইতে পীড়িত। কণ্ঠ মহাশয়ের মুখে প্রকাশ নাই, কিন্তু ভৃত্যগুলিকে অতিশয়