ক্রমে ক্রমে এক একজন করিয়া দুইজন পিয়নের সহিত উত্তমরূপ আলাপ করিয়া লয়। কোন স্থান হইতে তাহার পত্র আসিলে যে পিয়ন সেই পত্র তাহাকে প্রদান করিতে যাইত, তাহাকে প্রায়ই দুই চারি আনা পারিতোষিক না দিয়া গোবিন্দ ছাড়িত না। তদ্ব্যতীত পূজা-পার্ব্বণে প্রায়ই তাহাদিগকে ডাকিয়া বক্সিস্ বলিয়া কিছু না কিছু প্রদান করিত। এইরূপে কিছু দিবসের মধ্যেই পিয়নদ্বয়কে এরূপ ভাবে আপনার বশীভূত করিয়া লইল যে, গোবিন্দ যাহা বলিত, তাহারা তাহাই শুনিত। পিয়নদ্বয় কোন পত্রাদি তাহার নিকট বিলি করিতে আসিলে, তখন প্রায়ই তাহাদিগের নিকট অপরের যে সকল পত্র থাকিত, তাহার শিরোনামা, ও পোষ্টকার্ড হইলে তাহাতে যাহা লেখা থাকিত, গোবিন্দ তাহা পড়িয়া লইত। কেন যে সে এইরূপ ভাবে চিঠিপত্র পড়িয়া দেখিত, ডাকপিয়নদ্বয় তাহার কিছুই বুঝিয়া উঠিতে পারিত না। পাঠ সমাপ্ত হইলে কিছু পারিতোষিকের সহিত সেই সকল পত্র পুনরায় ডাকপিয়নের হস্তে প্রদান করিত। তাহারা সেই সকল পত্র লইয়া, যে যে স্থানে বিলি করা আবশ্য়ক, পরে সেই সেই স্থানে তাহা বিলি করিত। এইরূপে কিছু দিবস অতিবাহিত হইয়া গেলে, একদিবস গোবিন্দ উহাদিগের একজন পিয়নকে জিজ্ঞাসা করিল, “তোমরা যে সকল পত্র বিলি করিয়া থাক, তাহাদের মধ্যে যদি কোন পত্র তোমাদিগের হস্ত হইতে হারাইয়া যায়, তাহা হইলে তোমাদিগকে কি কোনরূপ দণ্ড গ্রহণ করিতে হয়?”
পিয়ন। পোষ্টকার্ড বা যে সকল পত্রে টিকিট দেওয়া আছে, তাহা হারাইয়া গেলে, আমাদিগকে কোনরূপ দণ্ড লইতে হয়