পাতা:রক্তকরবী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\LSS বাধত না। ও বলে জ্ঞানের তপোবনে দয়ামায়া ভালোবাসা ঢুকলেই তপোভঙ্গ হয় । WS) ক্ষয়ে এসেচে । পুরাণবাগীশ তোমাদের রাজা কি নিজেকে নিজে সামলাতে পারে না ? অধ্যাপক আরে ও কি আমাদের মত মানুষ ? ও যেন মানুষের ঝড়, মানুষের বন্যা। ওর ভিতর দিয়ে সমস্ত যুগের ধাক্কা লোকালয়ের উপর এসে পড়ে। —ঐ দেখ অগ্নিকাণ্ড বাধাল বুঝি ! কোন বোঝাটার মধ্যে আগুন ধরিয়ে দিলে কে জানে! জানলার ভিতর দিয়ে আভা আসচে। ইস এ যে নীল আগুন । পুরাণবাগীশ । এ কোন জায়গায় আমাকে আনলে বল ত, অধ্যাপক, আর কি করতেই বা আনলে । অধ্যাপক জগতে যা কিছু জানবার আছে সমস্তই ও জানার দ্বারা আত্মসাৎ করতে চায়। বস্তুতত্ত্ব নিয়ে আমার যতটুকু বিদ্যে ছিল প্রায় ত শেষ হয়ে এল ! পুরাণবাগীশ আমি ত, দাদা, বস্তুর ধার ধারি নে, পুরাণ আলোচনা করে আসচি। অধ্যাপক বেশ ত কিছুদিন পুরাণ কথাই চলুক। পুরাণবাগীশ তুমি এখানে আছ কি সুখে ? অধ্যাপক পুঁথিপত্র যা চাই তাই পাই। বিদ্যের মধ্যে কেবলই তলিয়ে চলেচি। সুখের কথা মনেও নেই। পুরাণবাগীশ তবে ? অধ্যাপক নেশা । জানার পর জানা, তারপর জানা, নেশার অন্ত নেই। পুরাণবাগীশ ওকেও সেই নেশা জুগিয়ে চলেচ ? অধ্যাপক এতদিন ত তাই চলছিল। কিছুদিন থেকে ওর বৃষের মত কাঁধটা নাড়া দিয়ে বলে বলে উঠচে, “কিছুই কোথাও পেচচ্ছে না।” আমি ওকে বলি, “নেশা কি কোথাও পৌঁছয়, শুধু এগোয়।” * পুরাণবাগীশ হঠাৎ এমন কেন হল ?