—তাও ত বটে। জননী জন্মভূমি বলেছে ত। তা যাঁকে মা বল্ছে, তাঁর জন্য অনেক দুঃখ সহ্য কর্তে হয়।
কুমুদিনী বিপিনের জন্য রেকাবি ক’রে জলখাবার এনে তার হাতে দিলেন।
পিসীমা বললনে,—হ্যাঁ রে বিপিন, তুই ত তিনটে পাশ করেছিস্, এখন কি করবি?
—কি আর কর্ব? এখনো ত কর্ম্মভোগ ফুরোয় নি, এখন এম এ পড়ব।
—ও আবার কোন্দেশী কথা! লেখাপড়া শেখা কি কর্ম্মভোগ?
—তা কেন? তবে পাশ করা ত আর লেখাপড়া নয়!
—তোর সবই অনাছিষ্টির কথা! আবার লেখাপড়া কাকে বলে?
—একজামিন পাশ করা কেবল কতকগুলো বই গেলা। হজমও হয় না, বিদ্যাও হয় না। বিদ্যা শিখতে হ’লে তার পর শিখতে হয়।
—কেন, পাশ ক’রে ছেলেরা ত রোজগেরে হ’ত।
—সে-কাল আর নেই। এখন পাশ কর—তার পর ভেরেণ্ডা ভাজ!
—সে-কথাও ত সত্যি। কত পাশ করা ছেলে সব ঘুরে ঘুরে বেড়ায়, কোথাও কিছু পায় না।
কোত্থেকে পাবে? উকীল ডাক্তার কেরাণী কত জন হবে? আমরা শুধু মার্কা-মারা মাল, তা বাজারে এ মাল চলে না। যেখানেই যাই, পাবার মধ্যে অর্দ্ধচন্দ্র! মাড়োয়ারীরা স্কুলেও যায় না, পাশও করে না, এদিকে অর্দ্ধেক কলকেতা সহর দখল ক’রে নিয়েছে। যে টাকাটা আমরা কলেজের পাদপদ্মে ঢালি, সেই টাকা দিয়ে মুদির দোকান করলে তবু পেট চল্ত।