বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজরোষ
৩৯

আসন ত্যাগ করিয়া উঠিলেন। শ্রোতাদের মধ্যে এক যুবক ধৈর্য্যচ্যুত হইয়া বলিয়া উঠিলেন,—‘সাধু সন্নাসীকে বিদ্রূপ অপমান করা রাজার উচিত কর্ম্ম বটে!’

 যুবা তেজস্বী, বলবান, অথচ সৌম্যমূর্ত্তি। সে স্বয়ং ক্ষত্রিয়, দুর সম্বন্ধে রাজার জ্ঞাতি, তাহাকে দেখিয়া রাজা চিনিলেন। ক্রোধে চক্ষু রক্তবর্ণ করিয়া কহিলেন,—‘উদয়ন, তুমি এখানে? যেমন দলে মিশিয়াছ সেইরূপ তোমার প্রকৃতি হইয়াছে। কাহার সহিত কথা কহিতেছ, তোমার স্মরণ নাই? তোমার মুখে এরূপ কথা?’

 উদয়ন কহিলেন,—‘সকলের মুখে এইরূপ কথা। গুপ্তচরেরা সে-সংবাদ দেয় না?’

 রাজার সঙ্গিগণ তর্জ্জন-গর্জ্জন করিয়া উদয়নের অভিমুখে অগ্রসর হইল। নাথপুত্রের শিষ্যগণ তৎক্ষণাৎ উদয়নকে বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইল। এরূপ স্থলে বল প্রকাশ যুক্তিযুক্ত নহে বিবেচনা করিয়া রাজার মোসাহেবেরা ক্ষান্ত হইল।

 নাথপুত্ত্র হস্ত উত্তোলন করিয়া কহিলেন,—‘মঙ্গল হউক!’

 এই বলিয়া তিনি সে-স্থান পরিত্যাগ করিলেন। শিষ্য ও শ্রোতাগণ তাঁহার সঙ্গে গেল। রাজা চীৎকার করিয়া কহিলেন,—‘উদয়ন, আজিকার অপমান আমার স্মরণ থাকিবে।’

 উদয়ন কোন উত্তর দিলেন না।

—২—

 রাজবাটী পরিত্যাগ করিয়া রাজা বিরূপাক্ষ কিছু দূরে বিস্তৃত উদ্যানের মধ্যে প্রমোদ ভবনে বাস করিতেন। রাজমাতা বর্ত্তমান,