বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:রথযাত্রা ও অন্যান্য গল্প - নগেন্দ্রনাথ গুপ্ত (১৯৩১).pdf/৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাজরোষ
৪৩

করিলেন। স্মিতমুখে পুরোহিত কহিলেন,—‘এমন কুটুম্বিতা কাহার বাঞ্ছনীয় না হইবে? মগধরাজের প্রস্তাবে রাজ-মাতা পরম সম্মানিত ও অনুগৃহীত হইয়াছেন।’

 বিরূপাক্ষ বিস্মিত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন,—‘তিনি অবগত আছেন?’

 দূত কহিলেন,—‘তাঁহার অবগতির জন্য প্রথমেই নিবেদন করা হইয়াছে।’

 —‘তিনি যেরূপ আদেশ করিবেন, তাহাই হইবে।’

 দূত এবং তাঁহার অনুচরগেণের রাত্রিবাসের ব্যবস্থা করিয়া দিয়া রাজা বিরূপাক্ষ পুরোহিতকে একান্তে কহিলেন,—‘ইহা আপনারই কাজ। মাতার সহিত পরামর্শ করিয়া আপনি এই সম্বন্ধ ঘটাইয়াছেন।’

 —‘ইহা ত কোন গর্হিত কর্ম্ম নয়। বাল্যকাল হইতে তোমাকে দেখিয়াছি, তোমাকে সুখী দেখিলে আমাদের আনন্দ। চক্রবর্ত্তী মহারাজার জামাতা হইবে ইহা অপেক্ষা সৌভাগ্যের বিষয় কি হইতে পারে?’

 —‘আমাকে না জিজ্ঞাসা করিয়াই আমাকে জড়াইবার চেষ্টা করিয়াছেন। বিবাহে আমার সম্মতি নাই।’

 —‘সঙ্গদোষে। বিবাহ হইলে সুবুদ্ধি হইবে।’

 রাজা রাগিয়া কহিলেন,—‘আপনার বড় স্পর্দ্ধা! যাহা মুখে আসিতেছে তাহাই বলিতেছেন!’

 —‘ব্রাহ্মণের মুখ কাহারও ভয়ে বন্ধ হয় না। সত্য কাহাকে ভয় করিবে?’

 রাজা উদ্যানে চলিয়া গেলেন। রাজমাতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করিলেন না।