পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৮ রবি-দীপিতা আমরা ফাল্গুনী থেকে যে অর্থগুলি টেনে বার করতে চেষ্টা করলুম সে সমস্তই এতে আছে, অথচ এটা রূপক নয়, উপদেশাবলিও নয়। সাধারণ নাটকে যেমন চরিত্র ও দৈবের ( character and accident ) গাঢ় সংমিশ্রণ থাকে এতে তা নেই, কাজেই সে রকম নাটক হিসাবে এর কোনও জায়গা নেই, এবং সেজন্য এটা নাটক হয় নি। অথচ কাব্য হিসাবে এর স্থান অত্যন্ত উচুতে, কারণ অভিধা বা সোজা কথায় কিছু বলবার কোনও চেষ্টা এতে নেই, একদিকে যেমন গানে গানে একটা আনন্দের উৎসরস ধ্বনিত হয়ে উঠেছে, অপরদিকে তেমনি যে কথাগুলি আমরা বললাম সেইগুলি নিয়ে একটা বস্তুধ্বনি ও যুগপৎ ভেসে উঠেছে, কিন্তু কোনটা থেকে কোনটা পৃথক করা যায় না ; অথচ যেন ফুলের গন্ধের মতন এর গায়ে গায়ে জড়িয়ে রয়েছে। অভিধার অতি স্থল্ম তারের উপর সমস্ত রাগ রাগিণী ধ্বনিত হয়ে উঠেছে। শীতের মধ্য দিয়ে বসন্তের আগমন হচ্ছে এর উপাখ্যান-ভাগ বা mythiopic process, এই ব্যাপারটার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত ক’রে আমাদের জীবনকে যে নূতন ঢঙে দেখবার চেষ্টা করা হয়েছে, সেইটি হচ্ছে এখানকার “সমালোচনা” বা objective criticism of life ; এবং এই সমালোচনের ফলে জীবনপ্রবাহের মধ্যে জরী-যৌবনের যে গৃঢ় কথাটি ধ্বনিত হয়েছে, সেটি হচ্ছে, ব্যঞ্জন ফল, ধ্বনি বা crowning transfiguration । সমস্ত ব্যাপারটিকে সংযম অসংযমের মাঝখানে রেখে এমন করে ধরা হয়েছে, যে, এতে যে কোনও কথা বলা হবে, এমন আড়ম্বরের চিহ্নমাত্রও নেই, সমস্ত নাটকখানিই যেন একটি ফাঙ্কনের বসন্তোৎসব ; যেন হঠাৎ কবির মধ্যে থেকে পরভৃতিক গান গেয়ে উঠেছে— আতাম্ব হরিঅপাণ্ডুর জীবিঅ সব্বস মহুমাসস্থল। দিটোসি চুদস্তুরো তুমং পদাদেমি । বিশ্বনাথের খেয়াল ও কবির খেয়ালে মিলে একটি অপূৰ্ব্ব খেলার স্বই করেছে, আর অভিনেতৃবর্গের পারে নুপুরের সঙ্গে সঙ্গে একটি নব জীবনের নবীন আশার বাণী উঠেছে—