পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বলাকা 9s আসে একদিকে প্রাকৃতিক জগতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, অপরদিকে বিরাট মহন্তসমাজের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, আসে স্বার্থে স্বার্থে সঙ্ঘাত, আসে বিপদের উল্কাপাত, আসে বিভীষিকা । কবি তখন প্রার্থনা করেন, “বিপদে মোরে রক্ষা কর এ নহে মোর প্রার্থনা বিপদে যেন করিতে পারি জয় ।” এই বিপদ বিভীষিকা একান্তভাবে অনিয়মের আবির্ভাব নয় কারণ এই বিপদ বিভীষিকা সেই অসীমেরই আত্মপ্রকাশের উপায় মাত্র। ইহারা আমাদের বিরুদ্ধে দাড়াইয়া অমোদের স্বজনীশক্তিকে উদ্বুদ্ধ করে। সেইজন্য যখনই আমরা বিপদের সামনে আসি তখনই আমাদের মনে রাখা উচিত যে ইহাতে ভয় পাইবার কিছুই নাই। যখনই কবি বিঘ্নবিপদের সম্মুখে আসিয়াছেন তখনই তিনি আপন স্বজনীশক্তিকে আপন যৌবনবেগকে আপন চলন-ধৰ্ম্মকে “আবিরাবিৰ্মএধি” বলিয়া আহ্বান করিয়াছেন এবং বিঘ্নবিপদের মধ্যে তাহ উত্তরণের জয়ডঙ্কা শুনিয়াছেন এবং তাহার অরাজকতার মধ্যে লোকোত্তর নিয়মশৃঙ্খলকে প্রত্যক্ষ করিয়াছেন। বাধার আঘাতে স্বজন-শক্তির ক্রমবিকাশ, বাধার জয়ে এবং তাহাকে নিজের মধ্যে সংহরণের লীলাতে নিজের আত্মপ্রকাশের পূর্ণতর আবির্ভাব ও নিজের পরম সত্যের সাক্ষাৎকারের আনন্দ। এই গতির মধ্যেই কবি র্তাহার ধর্মের সাক্ষাৎকার পাইয়াছেন এবং এই গতিধৰ্ম্মের সহিত র্তাহার জীবনের, তাহার ব্যক্তিত্ব-প্রসারণের এমন অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক যে তিনি তাহাকে তাহার জীবন হইতে বিচ্ছিন্ন করিয়া দেখিতে প্রস্তুত নহেন। অন্তধাতুর স্বজনীশক্তির ক্রমবিকাশে, নিজের ব্যক্তিত্বের পরিণতিতে, যে একটি অবিচ্ছেদ্য ক্রমচ্ছন্দ আছে তাহাকেই তিনি র্তাহার ধৰ্ম্ম বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন। তাই তিনি বলিয়াছেন, “আমার ধৰ্ম্ম আমার জীবনের মূলে। সেই জীবন এখনও চলেছে কিন্তু মাঝ থেকে কোন এক সময়ে তার ধৰ্ম্মটা এমনি থেমে গিয়েছে যে তার উপরে টিকিট মেরে তাকে যাদুঘরে কৌতুহলী দর্শনের চোখের সম্মুখে ধরে রাখা যায় একথা বিশ্বাস করা শক্ত,••••••যেখানে আমি থামিনি,