পাতা:রবি-দীপিতা.pdf/৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আলোচন আলোচন বলিতে বুঝা যায় দেখ–দেখা শব্দটির অর্থের যে কোথায় আরম্ভ, কোথায় শেষ, তাহার সীমারেখা নির্ণ করা স্বকঠিন। কবি যে দৃষ্টিতে র্তাহার কাব্য বা কবিতাকে কাব্যরচনার সময় দেখেন, সে দৃষ্টির মধ্যে কাব্যের বস্তু ভাগ শব্দ ও ছন্দের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জডিত থাকিয়া রসাবেগের মধ্যে স্পন্দিত হইতে থাকে। সেই স্পন্দিত সত্তা একটি পূর্ণ সত্তা। সেই সত্তার মধ্যে বস্তু বা অর্থ, শব্দ ও ছন্দ, ইহাদের কাহাকেও পৃথক করিয়া পাওয়া যায় না। হৃদয়ের পদ্মকোরকের মধ্যে যেমন সমস্ত শিরা ও ধমনীর রক্তস্রোত তালে তালে নাচিষ উঠিয়া জীবশরীরের প্রাণপ্রক্রিয়াকে তাহার স্বচ্ছন্দগতিতে প্রতিষ্ঠিত করে, অথচ সেই শোণিতনৰ্ত্তনের মধ্যে অবিভক্তভাবে অবস্থিত বিচিত্র প্রণালীকে পৃথক করিয়া দেখা যায় না, তেমনি কবির হৃদয়স্পর্শের মধ্যে যে অমূৰ্ব আলোচন রূপ-পরিগ্রহের বেদনায় অন্তগূঢ় তপ:প্রেরণার ফলে আপনাকে কাব্যশরীরে বিভক্ত করে, সেই আলোচনের মধ্যে শব্দ, অর্থ, ছন্দ, রস বিভাজ্যমান অথচ অবিভক্ত হইয়ু কবিচিত্তকে স্পন্দিত করিয়া তোলে। কোনও কোনও চিন্তাশীল লেখক বলেন, যে কবিচিত্তের অনুভূতিব মধ্যে এই যে কাব্যের আদিম আলোচন ইহাই কাব্যস্থষ্টি । কারণ ইহা একদিকে যেমন অনুভব, অপরদিকে তেমনি প্রকাশ। ধ্বন্যাকারে যাহা স্বষ্টি তাহ বাহ ও গৌণ স্বষ্টি মাত্র, কবিহৃদয়ের কাব্যের আলোচনেই কাব্যের সৃষ্টি । দ্বিতীয় স্তরে দেখা যায় যে কবি তাহার রসাতৃভূতিকে যখন অজ্ঞাত বীক্ষা-শক্তি (aesthetic activity) দ্বারা শব্দ ও ছন্দের মধ্য দিয়া ফুটাইয়া তুলিবার তপস্যায় নিরত থাকেন, তখন নানা বিরোধী শব্দের আকর্ষণ হইতে আপনাকে আপন রসযোগমার্গে ধারণ করিবার চেষ্টায় বাহ আভ্যস্তর এই উভকেই বিধারণ করিয়া তাহার একটি আলোচনক্রিয়া চলে, যাহার ফলে কবি তাহার রসামুগামী শব্দ, অর্থ