নিবেদন
আমার এই সমালোচনাটি ১৩১৮ সালের ২৫এ বৈশাখে কবিবর রবীন্দ্রনাথের পঞ্চাশ বৎসর পূর্ণ হইবার উপলক্ষে জন্মোৎসবের জন্য লিখিত হইয়াছিল এবং শান্তিনিকেতনে পঠিত হইয়াছিল। ১৩১৮ সালের ‘প্রবাসী’র আষাঢ় ও শ্রাবণ সংখ্যায় ইহা প্রকাশিত করিয়া শ্রদ্ধেয় ‘প্রবাসী’-সম্পাদক মহাশয় আমাকে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করিয়াছেন।
সাহিত্য-সমালোচনা বলিতে আমাদের দেশের প্রাকৃতজনের সংস্কার এইরূপ যে, রচনামাত্রকে ভালো এবং মন্দ এই দুইটা মোটা ভাগে বিভক্ত করিয়া বাটখারার দুই পাল্লায় চাপাইয়া তৌল করিয়া দেখিতে হইবে। কিন্তু কোনো ব্যক্তির সাহিত্যকে এমন খণ্ডভাবে দেখাকে আমি সত্য দেখা বলিয়া মনে করিতে পারি না। বড় সাহিত্যিকের বা কবির সকল রচনার মধ্যে অভিব্যক্তির একটি অবিচ্ছিন্ন সূত্র থাকে; সেই সূত্র তাহার পূর্বকে উত্তরের সঙ্গে গাঁথিয়া তোলে, তাহার সমস্ত বিচ্ছিন্নতাকে বাঁধিয়া দেয়। অপূর্ণতা–অস্ফুটতা হইতে ক্রমে ক্রমে তাহা সুস্পষ্ট পরিণতির দিকে অগ্রসর হয়— সেইজন্য কবির বা সাহিত্যিকের রচনার মন্দ মানে অপরিণামের মন্দ এবং ভালো মানে পরিণতির ভালো। কবির বা সাহিত্যিকের সেই পরিণতির আদর্শের মানদণ্ডেই তাঁহার রচনার ভালোমন্দকে মাপিতে হইবে, তা বই ভালো এবং মন্দকে প্রত্যেকের আপন আপন সংস্কারানুসারে দুই টুকরা করিয়া নিক্তির মাপে ওজন করিলে চলিবে না।
কবি রবীন্দ্রনাথের সমস্ত রচনার মধ্যে তাঁহার এই ভিতরকার