পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টম খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

48 o রবীক্স-রচনাবলী শরীরের প্রয়োজন হয়। সাহিত্য-পরিষদের সেই আদ্য প্রয়োজন আজ সম্পূর্ণ হইয়াছে ; এখন হইতে তাহার ধর্মসাধনা সবলে সিদ্ধির পথে অগ্রসর হইবে এইরূপ আশা করা যাইতেছে। ইতর জন্তুর অপেক্ষ মানুষের গর্ভবাসকালও দীর্ঘ ; তাহার শৈশব অবস্থাও অচির নহে। শ্রেষ্ঠতালাভের মূল্যস্বরূপ মানুষকে এই বিলম্ব স্বীকার করিতে হয় । সাহিত্য-পরিষৎকেও তাহার বাহশরীর পূর্ণ করিতে বিলম্ব সাধিত হইয়াছে। অনেক দিন ধরিয়া নিজের প্রাণশক্তির পরিচয় দিয়া দেশের লোকের শ্রদ্ধা ও আকাজক্ষার মধ্যে স্থানলাভ করিয়া তবে তাহার এই স্থূলদেহটি আজ প্রকাশ প্রাপ্ত হইয়াছে । এই স্বাভাবিক বিলম্বই আমাদের পক্ষে আশার কারণ । ইহা ভোজবাজির খেলার মত অকস্মাৎ কোনো খামখেয়ালির শ্রদ্ধাহীন টাকার জোরে একরাত্রে স্বই হয় নাই। অনেক দিন দেশের হৃৎসঞ্চারিত রক্তের দ্বারা পুষ্ট হইয়া তাহার জীবন হইতে জীবনলাভ করিয়া তবেই প্রাকৃতিক অভিব্যক্তির নিয়মে পরিষদের শারীরিক আবির্ভাব ঘটিয়াছে । কিন্তু এখনো আমাদের সম্পূর্ণ নির্ভয় ও নিশ্চিন্ত হইবার সময় আসে নাই। এখনো এ শিশু অনেক দিন জননীর সতর্ক স্নেহের অপেক্ষ রাখে—তাহার পরে বড়ো হইয়া বলিষ্ঠ হইয়া জননীকে নির্ভর দান করিবে । অদ্যকার উৎসবে এই নবদেহপ্রাপ্ত সাহিত্য-পরিষদের মুখ দেখিয়া সমস্ত দেশের স্নেহ ও আশীৰ্বাদ ইহার প্রতি আকৃষ্ট হইবে, এই আমরা আশা করিয়া আছি। ঘে-পর্যন্ত ইহার শৈশবের দুর্বলতা কিছুমাত্র থাকিবে, সে-পর্যন্ত বাঙালি ইহাকে পোষণ করিবে, ইহার অভাব দূর করিয়া নিজের অভাবমোচনের পন্থা করিবে, এই অত্যস্ত স্বাভাবিক প্রত্যাশা লইয়া আজ আমরা আনন্দ করিতে আসিয়াছি। 尊 তৰু মন হইতে ভয় দূর হয় না। কারণ, যাহারা দুর্তাগা তাহারা স্বভাব হইতেই ভ্ৰষ্ট হয়। যে পুত্র পূর্ণতা দান করে, সকলে তাহাকে স্বভাবতই পূর্ণ করিতে চায় ; কেবল ভাগ্যে যাহার দুৰ্গতি আছে সে আপন ভাবী আশাস্পদকেও অন্নদান করিতে বিমুখ হয়। Vর্বাংলাদেশের ঘরেও মাঝে মাঝে দেবলোক হইতে মঙ্গল নানা আকার ধরিয়া অবতীর্ণ হইয়াছে। আমরা তাহার সকলটিকে পালন করি নাই,—