পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>やo அ রবীন্দ্র-রচনাবলী সব গীতরসিক, আকাশের বেদনার সঙ্গে হৃদয়ের রাগিণীর মিল করে । ধরে ধরে, “ঝরে ঝর ঝর” । * { ঝরে ঝর ঝর ভাদর বাদর, বিরহকাতর শর্বরী। ফিরিছে এ কোন অসীম রোদন কানন কানন মর্মরি। আমার প্রাণের রাগিণী আজি এ গগনে গগনে উঠিল বাজিয়ে। হৃদয় একি রে ব্যাপিল তিমিরে সমীরে সমীরে সঞ্চরি। নটরাজ। শ্রাবণ ঘরছাড়া উদাসী। আলুথালু তার জটা, চোখে তার বিদ্যুৎ। অশ্রান্ত ধারায় একতারায় একই সুর সে বাজিয়ে বাজিয়ে সারা হল। পথহারা তার সব কথা বলে শেষ করতে পারলে না। ওই শুকুন মহারাজ মেঘমল্লার । কোথা যে উধাও হল মোর প্রাণ উদাসী আজি ভরা বাদরে । ঘন ঘন গুরু গুরু গরজিছে, ঝরঝর নামে দিকে দিগস্তে জলধারা, মন ছুটে শূন্যে শূন্তে অনন্তে অশাস্ত বাতাসে । রাজা । পুব দিকটা আলো হয়ে উঠল যে, কে আসে ? নটরাজ। শ্রাবণের পূর্ণিমা । রাজকবি। শ্রাবণের পূর্ণিমা ! হাঃ হাঃ হাঃ । কালে খাপটাই দেখা যাবে, তলোয়ারটা রইবে ইশারায় । রাজা। নটরাজ, শ্রাবণের পূর্ণিমায় পূর্ণতা কোথায়? ও তো বসন্তের পূর্ণিমা নয়। নটরাজ। মহারাজ, বসন্তপূর্ণিমাই তো অপূর্ণ। তাতে চোখের জল নেই কেবলমাত্র হাসি। শ্রাবণের শুক্ল রাতে হাসি বলছে আমার জিত, কান্না বলছে আমার । ফুল ফোটার সঙ্গে ফুল ঝরার মালাবদল। ওগো কলস্বরা, পূর্ণিমার ডালাটি খুলে দেখে, , ও কী আনলে । 最 আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে কী এনেছিল বল, হাসির কানায় কানায় ভরা কোন নয়নের জল ।