পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সঞ্চয় \లిసెt আত্মপরের মিল যেখানে সেইখানেই তাহারা বিহার করিতেছেন। শক্রকে ক্ষমা করিবে একথা বলিলে যথেষ্ট বলা হইল কিন্তু তাহারা সে কথাও ছাড়াইয়া বলিয়াছেন শক্রকেও প্রতিদান করিবে যেমন করিয়া চন্দনতরু আঘাতকারীকেও সুগন্ধ দান করে। তাহার কারণ এই প্রেমের মধ্যেই তাহারা সত্যকে পূর্ণ করিয়া দেখিয়াছেন, এইজন্ত স্বভাবতই সে-পর্যন্ত না গিয়া তাহারা থামিতে পারেন না। তুমি বড়ো হও, ভালো হও এই কথাই মানুষের পক্ষে কম কথা নয় কিন্তু তাহার একেবারে বলিয়া বসেন— শরবৎ তন্ময়ো ভৰেং । শর যেমন লক্ষ্যের মধ্যে একেবারে নিবিষ্ট হইয়া যায় তেমনি করিয়া তন্ময় হইয়া ব্রহ্মের মধ্যে প্রবেশ করে । ব্ৰহ্মই পরিপূর্ণ সত্য এবং তাহাকেই পূর্ণভাবে পাইতে হইবে এই কথাটিকে খাটো করিয়া বলা তাহদের কর্ম নহে –তাই তাহারা স্পষ্ট করিয়াই বলেন যে, তাহাকে না জানিয়া যে মানুষ কেবল জপ তপ করিয়াই কাটায় অস্তবদেবাস্ত তদভবতি, তাহার সে সমস্তই বিনষ্ট হইয়া যায় –ৰ্তাহাকে না জানিয়াই যে ব্যক্তি ইহলোক হইতে অপস্থত হয়, স কৃপণঃ – সে কৃপাপাত্র । অতএব ইহা দেখা যাইতেছে, মামুষের মধ্যে র্যাহারা সকলের বড়ে তাহার সেইখানকার কথাই বলিতেছেন যাহা সকলের চরম । কোনো প্রয়োজনের দিকে তাকাইয়া সে সত্যকে তাহার ছোটো করেন না । সেই চরম লক্ষ্যকেই অসংশয়ে সুস্পষ্টরূপে সকল সত্যের পরম সত্য বলিয়া স্বীকার না করিলে মানুষকে আত্মঅবিশ্বাসী ও ভীক করিয়া রাখা হয় ; বাধার ওপারে যে সত্য আছে তাহার কথাই তাহাকে বড়ো করিয়া না শুনাইয়া বাধাটার উপরেই যদি বেীক দেওয়া হয় তবে সে অবস্থায় মাস্থ্য সেই বাধার সঙ্গেই আপস করিয়াই বাসা বাধে এবং সত্যকেই আয়ত্তের অতীত বলিয়া ব্যবহারের বাহিরে নির্বাসিত করিয়া দেয়। কিন্তু মানবগুরুগণ যে পরম লাভ, যে অসাধ্যসাধনের কথা বলেন তাহাকেই তাহার মানুষের ধর্ম বলিয়া থাকেন। অর্থাৎ তাহাই মানুষের পরিপূর্ণ স্বভাব, তাহাই মামুষের সত্য। যেমনি লোভ হইবে অমনি কাড়িয়া খাইবে মানুষের মধ্যে এমন একটা প্রবৃত্তি আছে সে কথা অস্বীকার করি না কিন্তু তবু ইহাকে আমরা মানুষের ধর্ম অর্থাৎ মানুষের সত্যকার স্বভাব বলি না। লোভ হইলেও লোভ দমন করিবে, পরের অল্প কাড়িয়া খাইবে না, একথা বলিলেও কম বলা হয় না-কিন্তু তবু এখানেও মানুষ থামিতে পারে না । সে বলিয়াছে, ক্ষুধিতকে নিজের অন্ন দান করিবে, ইহাই মামুষের ধর্ম, ইহাই মানুষের পুণ্য, অর্থাৎ তাহার পূর্ণতা। অথচ লোকসংখ্যা গণনা করিয়া যদি ওজনারে মামুষের ধর্ম বিচার করিতে হয় তবে নিশ্চয়ই বলিতে হুইবে নিজের অন্ন পরকে দান