পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (অষ্টাদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

brや রবীন্দ্র-রচনাবলী शऊ एशिक्ल शोन्ल७ ।। তীর সঙ্গে ভ্ৰমণকালে বার বার আমার এই কথাটি মনে হয়েছে যে, তিনি তার নাম সার্থক করেছেন, সত্য এবং প্রসন্নতা এই দুইই তার ছিল স্বভাবসিদ্ধ। তার বুদ্ধির পরে, তীর সত্যের 'পরে এবং তীর সৌহার্দোর পরে সম্পূর্ণ নির্ভর করা যেত; এই গুণেই সংসারে তিনি বড়ো হতে পেরেছেন, বড়ো হবার জন্যে র্তাকে কোনো কৌশল করতে হয় নি। লর্ড সিংহের মৃত্যুতে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে যে বেদনা লেগেছে তার একটা কারণ এই যে, কিছুদিনের নিয়ত সঙ্গলাভের মধ্য দিয়ে আমি তীর আত্মীয়তা পেয়েছি। আরো একটি কারণ আছে। আমাদের গ্রামগুলির জীৰ্ণতা সংস্কার করে তাদের মধ্যে প্ৰাণ সঞ্চার করতে পারলে তবে আমাদের দেশকে বাঁচাতে পারা যাবে, এই কথাটি মনে রেখে দীর্ঘকাল থেকে আমার সাধ্যানুসারে কিছু কিছু কাজ করবার চেষ্টা করেছি। এই কাজে আমার স্বদেশের লোকের মধ্যে যে দুই-এক জনের সহায়তা পেয়েছি তার মধ্যে লর্ড সিংহ ছিলেন সর্বপ্ৰধান। তার এই সহায়তা ছিল অপ্ৰগলভ, কিন্তু সকল প্রকারেই খুব খাটি। এই কাজ সম্বন্ধে যথার্থতার আস্থা ছিল— সে কেবল দেশের প্রতি তার প্রেমবশত, লোকরঞ্জনের জন্যে নয়। এ ব্যাপারে। আমার সঙ্গে তার সহযোগিতার সূত্রপাত হয়েছিল। সেই সূত্র অকস্মাৎ ছিন্ন হয়ে গেল। ভাগ্যের কার্পণ্যফলে দৈবাৎ আমরা অতি অল্পই পেয়ে থাকি; এইজনে যে বন্ধুকে হারাই তীর ক্ষতিপূরণের ভরসা মনে থাকে না। সেই দুঃখের মধ্যে আজ কেবল তীর সঙ্গে আমার সৌহৃদ্যের সম্বন্ধ ও আমার সংকল্পে তীর সমর্থন ও সহযোগিতার গৌরব স্বীকার করে এই কয়েকটি ছত্র তার উদ্দেশে উৎসর্গ করে क्लिश ।। १ b, »७७8 প্রবাসী বৈশাখ ১৩৩৫ , উমা দেবী বীণার তার হঠাৎ ছিড়ে গিয়ে গান যদি অকালে স্তব্ধ হয়ে যায়। তবে তার অন্তঃপ্রবাহ শ্রোতার মনে নীরবে সমাপ্তির মুখে চলতে থাকে; উমার অসম্পূর্ণ জীবন তেমনি করে অকালমৃত্যুর মধ্যে দিয়ে তার প্ৰিয়জনদের মনের মধ্যে একটি অন্তরতর গতি লাভ করেছে। সংসারে স্নেহ দেবার এবং স্নেহ পাবার ইচ্ছা তার জীবনে সব চেয়ে একান্ত ছিল। ফুল যেমন আলো চায় এবং গন্ধ দেয়, সে তার অল্পায়ু জীবলীলায় তেমনি করেই গ্ৰীতি দিয়েছে এবং নিয়েছে। সেই দেওয়া নেওয়ার অবসান হল এমন কথা মনে করে যেন বিলাপ না করি। জীবিতকালেই সে অনুভব করেছিল যে, তার স্পর্শশক্তি মৃত্যুর অন্তরাল অতিক্রম করেছে; আজ শ্রদ্ধার সঙ্গে যেন মনে করি যে তার আত্মিক শক্তি ইহলোক পরলোকের মাঝখানে আত্মীয়তার সেতু রচনা করে আছে এবং আত্মীয় বন্ধুদের কাছ থেকে শোকস্মৃতির অর্ঘ্য গ্রহণ করে এই মুহূর্তেই তার হৃদয় স্নিগ্ধ হল। তাঁর আত্মা শান্তিলাভ করুক, তৃপ্তিলাভ করুক, মর্ত্য জীবনের সমস্ত অপূর্ণতা থেকে মুক্তিলাভ করুক, এই কামনা করি। [২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৩১] | অরবিন্দ ঘোষ অনেক দিন মনে ছিল অরবিন্দ ঘোষকে দেখব। সেই আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ হল। তাঁকে দেখে যা আমার মনে জেগেছে সেই কথা লিখতে ইচ্ছা করি। , খৃস্টান শাস্ত্ৰে বলে বাণীই আদ্যা শক্তি। সেই শক্তিই সৃষ্টিরূপে প্ৰকাশ পায়। নবযুগ নব সৃষ্টি,