পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ঊনবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

外爾@改 Sఅలి জিজ্ঞাসা করিলেন, “সেই ব্যাথাটা কি বাড়িয়া উঠিয়াছে। ঔষধটা একবার মালিশ করিলে হয় না ?” 平 - বলিয়া শিশিট টেবিল হইতে লইয়া দেখিলেন, সেটা খালি । আমার স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করিলেন,"আপনি কি ভুল করিয়া এই ওষুধটা খাইয়াছেন ?” আমার স্ত্রী ঘাড় নাড়িয়া নীরবে জানাইলেন, “হঁ।” ডাক্তার তৎক্ষণাং গাড়ি করিয়া তাহার বাড়ি হইতে পাম্প আনিতে ছুটলেন। আমি অর্ধমূছিতের স্তায় আমার স্ত্রীর বিছানার উপর গিয়া পড়িলাম। তখন, মাতা তাহার পীড়িত শিশুকে যেমন করিয়া সান্থনা করে তেমনি করিয়া তিনি আমার মাথা তাহার বক্ষের কাছে টানিয়া লইয়া দুই হস্তের স্পর্শে আমাকে তাহার মনের কথা বুঝাইতে চেষ্টা করিলেন। কেবল র্তাহার সেই করুণ স্পর্শের দ্বারাই আমাকে বারংবার করিয়া বলিতে লাগিলেন, “শোক করিয়ো না, ভালোই হইয়াছে, তুমি স্বধী হইবে, এবং সেই মনে করিয়া আমি স্বখে মরিলাম।” ডাক্তার যখন ফিরিলেন, তখন জীবনের সঙ্গে সঙ্গে আমার স্ত্রীর সকল যন্ত্রণার অবসান হইয়াছে। দক্ষিণাচরণ আর-একবার জল খাইয়া বলিলেন, “উ:, বড়ো গরম !” বলিয়া দ্রুত বাহির হইয়া বারকয়েক বারান্দায় পায়চারি করিয়া আসিয়া বসিলেন । বেশ বোঝা গেল, তিনি বলিতে চাহেন না কিন্তু আমি যেন জাদু করিয়া তাহার নিকট হইতে কথা কাড়িয়া লইতেছি । আবার আরম্ভ করিলেন— মনোরমাকে বিবাহ করিয়া দেশে ফিরিলাম । মনোরম তাহার পিতার সন্মতিক্রমে আমাকে বিবাহ করিল ; কিন্তু আমি যখন তাহাকে আদরের কথা বলিতাম, প্রেমালাপ করিয়া তাহার হৃদয় অধিকার করিবার চেষ্টা করিতাম, সে হাসিত না, গম্ভীর হইয়া থাকিত। তাহার মনের কোথায় কোনখানে কী খটকা লাগিয়া গিয়াছিল, আমি কেমন করিয়া বুঝিব? এইসময় আমার মদ খাইবার নেশা অত্যন্ত বাড়িয়া উঠিল। একদিন প্রথম শরতের সন্ধ্যায় মনোরমাকে লইয়া আমাদের বরানগরের বাগানে বেড়াইতেছি। ছমছমে অন্ধকার হইয়া আসিয়াছে। পাখিদের বাসায় ডানা ঝাড়িবার শব্দটুকুও নাই। কেবল বেড়াইবার পথের দুইধারে ঘনছায়াবৃত ঝাউগাছ বাতাসে সশব্দে কঁাপিতেছিল।