২৬ রবীন্দ্র-রচনাবলী মৌনশান্ত অসীমতা নিশ্চল সাগর, তারি মাঝখান হতে উঠে এস ধীরে তরুণী লক্ষ্মীর মতো হৃদয়ের তীরে আঁখির সম্মুখে । সমস্ত প্রহরগুলি ছিন্ন পুষ্পদলসম পড়ে যাক খুলি তব চারি দিকে— বিদীর্ণ নিশীথখানি খসে যাক নীচে । বক্ষ হতে লহ টানি অঞ্চল তোমার, দাও অবারিত করি শুভ্ৰ ভাল, আঁখি হতে লহ অপসরি উন্মুক্ত অলক। কোনো মর্ত্য দেখে নাই ষে দিব্য মুরতি আমারে দেখাও তাই এ বিশ্রান্ধ রজনীতে নিস্তব্ধ বিরলে। উৎসুক উন্মুখ চিত্ত চরণের তলে চকিতে পরশ করে ; একটি চুম্বন ললাটে রাখিয়া যাও, একান্ত নির্জন সন্ধ্যার তারার মতো ; আলিঙ্গনস্থতি অঙ্গে তরঙ্গিয়া দাও, অনস্তের গীতি বাজায়ে শিরার তন্ত্রে। ফাটুক হৃদয় ভূমানন্দে– ব্যাপ্ত হয়ে যাক শূন্তময় গানের তানের মতো । একরাত্রি-তরে হে অমরী, অমর করিয়া দাও মোরে । তোমাদের বাসরকুঞ্জের বহির্দ্বারে । বসে আছি— কানে আসিতেছে বারে বারে মৃদ্ধমন্দ কথা, বাজিতেছে স্বমধুর রিনিঝিনি রুমুঝুস্থ সোনার নূপুর— কার কেশপাশ হতে খসি পুষ্পদল পড়িছে আমার বক্ষে, করিছে চঞ্চল চেতনাপ্রবাহ। কোথায় গাহিছ গান। তোমরা কাহার মিলি করিতেছ পান
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪০
অবয়ব