পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8 e 3 রবীন্দ্র-রচনাবলী বাড়িতেই থাকে, এই সভ্যতাকেই একমাত্র আদর্শ বলিয়। বোধ হয়, এবং নিজের সামর্থ্যকে ও সম্পদকে একেবারে নগণ্য বলিয়া জ্ঞান হয়। ইহাতে স্বচেষ্টা পরাস্ত হয়, আত্মগৌরব দূর হয়, ভবিষ্যতের জন্ত কোনো আশা থাকে না, এবং জড়ত্বের মধ্যে অনায়াসেই আত্মসমর্পণ করিয়া নিরাপত্তির আরামে নিক্সার অচেতনতায় সমস্ত জুলিয়া शंकिएउ हेल्लो इम्न । বিশেষত আমাদের বর্তমান অবস্থা ধর্মে কর্মে বিম্ভাবুদ্ধিতে অত্যন্ত দীন। যুরোপীয় সভ্যতাকে কেবল নিজের সেই দীনতার সহিত তুলনা করিয়া নিজেদের সম্বন্ধে হতাশ্বাস হইয়া পড়ি। এ অবস্থায় প্রথমে আমাদের বুঝিতে হইবে, বল্বপ্রধান শক্তিপ্রধান সভ্যতাই একমাত্র সভ্যত নহে, ধর্মপ্রধান মঙ্গলপ্রধান সভ্যতা তাহ অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ । তাহার পরে, এই শেষোক্ত সভ্যতাই আমাদের ছিল, স্বতরাং শেষোক্ত সভ্যতার শক্তি জামাদের প্রকৃতির মধ্যে নিহিত হইয়া আছে ইহাই জানিয়া আমাদিগকে মাথা তুলিতে হইবে, আমাদিগকে আশা ও আনন্দ লাভ করিতে হইবে। আমরা বর্তমান দুৰ্গতির মধ্যে নিজেদের বিচ্ছিন্ন ক্ষুদ্র করিয়া রাখিলে, য়ুরোপীয় ব্যাপারের বৃহত্ত্ব আমাদের বুদ্ধিকে দলন-পেষণ করিয়া তাহাকে আপনার চিরদাস করিয়া রাখিবে। সেই বুদ্ধির দাসত্ব, রুচির দাসত্ব আমরা প্রত্যহ অনুভব করিতেছি। প্রাচীন ভারতের সহিত নিজেকে সংযুক্ত করিয়া নিজেকে বড়ো করিয়া তুলিতে হইবে। জড়পদার্থের অপেক্ষ মানুষ জটিল জিনিস, জড়শক্তি অপেক্ষ মানুষের ইচ্ছাশক্তি দুর্ধর্ষতর, এবং বাহসম্পদের অপেক্ষ স্থখ অনেক বেশি দুর্লভ। সেই মাছুষকে আকর্ষণ করিয়া, তাহার প্রবৃত্তিকে সংযত করিয়া, তাহার ইচ্ছাশক্তিকে নিয়ন্ত্ৰিত করিয়া, ষে সভ্যতা মুখ দিয়াছে, সন্তোষ দিয়াছে, আনন্দ ও মুক্তির অধিকারী করিয়াছে, সেই সভ্যতার মাহাত্ম্য আমাদিগকে যথার্থভাবে উপলব্ধি করিতে হইবে। উপলব্ধি করা কঠিন, কারণ তাহা বস্তুপুঞ্জে এবং বাহশক্তির প্রাবল্যে আমাদের ইন্দ্ৰিয়মনকে অতিমাত্র অধিকার করে না। সমস্ত শ্রেষ্ঠ পদার্থের স্তায় তাহার মধ্যে একটি নিগৃঢ়ত আছে, গভীরতা আছে – তাহ বাহির হইতে গায়ে পড়িয়া অভিভূত করিয়া দেয় না, নিজের চেষ্টায় তাহার মধ্যে প্রবেশ করিতে হয়— সংবাদপত্রে তাহার কোনো বিজ্ঞাপন নাই । এইজন্য ভারতবর্ষের প্রাচীন সভ্যতাকে বন্ডর তালিকা-দ্বারা স্ফীত করিয়া তুলিতে পারি না বলিয়, তাহাকে নিজের কাছে প্রত্যক্ষগোচর করিতে পারি না বলিয়া, আমরা পুপকরণকে রেলগাড়ি বলিতে চেষ্টা করি এবং ধর্মকে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা-ৰাৱা কুটিল