পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SNOV) রবীন্দ্র-রচনাবলী কৃষ্ণকলি কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, কালো তারে বলে গায়ের লোক । মেঘলা দিনে দেখেছিলেম মাঠে কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ । ঘোমটা মাথায় ছিল না। তার মোটে, । মুক্তবেণী পিঠের পরে লোটে । ” কালো ? তা সে যতই কালো হােক দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ । ঘন মেঘে আঁধার হল দেখে ডাকতেছিল শ্যামল দুটি গাই, শ্যামা মেয়ে ব্যস্ত ব্যাকুল পদে কুটির হতে ত্ৰস্ত এল তাই। আকাশ-পানে হানি যুগল ভুরু । শুনলে ব্যারেক মেঘের গুরুগুরু । কালো ? তা সে যতই কালো হােক । দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ । পুবে বাতাস এল। হঠাৎ ধেয়ে, ধানের খেতে খেলিয়ে গেল ঢেউ । আলোর ধারে দাড়িয়েছিলেম এক, মাঠের মাঝে আর ছিল না কেউ । আমার পানে দেখলে কিনা চেয়ে আমিই জানি আর জানে সে মেয়ে । , কালো ? তা সে যতই কালো হােক দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ । এমনি করে কালো কাজল মেঘ জ্যৈষ্ঠ মাসে আসে ঈশান কোণে । এমনি করে কালো কোমল ছায়া আষাঢ় মাসে নামে তমাল-বনে । এমনি করে শ্রাবণ-রজনীতে হঠাৎ খুশি ঘনিয়ে আসে চিতে । কালো ? তা সে যতই কালো হােক দেখেছি তার কালো হরিণ-চোখ । কৃষ্ণকলি আমি তারেই বলি, আর যা বলে বলুক অন্য লোক । কালো মেয়ের কালো হরিণ-চোখ ।