পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্থ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Wりのbr রবীন্দ্র-রচনাবলী দ্বিতীয় অঙ্ক । দৃশ্য কৈলাস বৃষস্কন্ধে মহেশ এবং শিলাতলে হৈমবতী আসীনা। নাটকের মধ্যে বৈচিত্র্যসাধনের জন্য হরপার্বতীর নাম পরিবর্তন করা গিয়াছে এবং দ্বিতীয় দৃশ্যে বৃষের অবতারণা করা হইয়াছে। যদি কোনো রঙ্গভূমিতে এই নাটকের অভিনয় হয় নিশ্চয়ই বৃষ সাজিবার লোকের অভাব হইবে না। বাক্ষ্যমাণ অঙ্কে পার্বতী মধুর সম্ভাষণে মহেশ্বরের নিকট হইতে বর্ষফল জানিয়া লইতেছেন। এই অঙ্কে প্রসঙ্গক্রমে সোনার ভারতের দুর্দশায় পার্বতীর বিলাপ এবং রেলগাড়ি প্রচলিত হওয়াতে আর্যাবর্তের কী কী অনিষ্ট ঘটিয়াছে তাহা কৌশলে বর্ণিত হইয়াছে। অবশেষে আঢ়কেশ ফল কুড়বেশ ফল এবং গোটিকাপাত ফল –নামক সুখশ্রাব্য প্রসঙ্গে এই অঙ্কের সমাপ্তি । তৃতীয় অঙ্ক এবং চতুর্থ অঙ্ক । দৃশ্য কৈলাস গজচর্মে ত্ৰ্যম্বক ও অম্বিক আসীনা নাট্যশালায় গজচর্মের আয়োজন যদি অসম্ভব হয়, কাপেট পাতিয়া দিলেই চলিবে । এই দুই অঙ্কে বারবেলা, কালবেলা, পরিঘযোগ, বিষ্কম্ভযোগ, অসূকযোগ, বিষ্টিভদ্রা, মহাদগ্ধা, নক্ষত্রফল, রাশিফল, ববীকরণ, বালব্যকরণ, তৈতিলকরণ, কিন্তুঘ্নকরণ, ঘাতচন্দ্র, তারাপ্রতিকার, গােচরফল প্রভৃতির বর্ণনা আছে ; অভিনেতাদিগের প্রতি লেখকের সবিনয় অনুরোধ, এই দুই অঙ্কে তাহারা যথাযথ ভােব রক্ষা করিয়া যেন অভিনয় করেন— কারণ অরিদ্বিদশ এবং মিত্ৰষড়ষ্টক -কথনে যদি অভিনেতার কণ্ঠস্বর ও অঙ্গভঙ্গিতে ভিন্নতা না থাকে, তবে দর্শকগণের চিত্তে কখনোই অনুরূপ ভােব উচ্ছসিত হইয়া উঠিবে না ! -- লেখক পঞ্চমাঙ্ক । দৃশ্য কৈলাস সিংহের উপর ত্রিপুরারি ও মহাদেবী আসীন (সিংহের অভাবে কাঠের চৌকি হইলে ক্ষতি নাই । -লেখক) মহাদেবী ! প্ৰভু, দেবদেব, তুমি তো ত্রিকালজ্ঞ, ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমান তোমার নখদর্পণে ; এইবার বলো দেখি। ১৮৭৯ সালের এক আইনে কী বলে । ত্রিপুরারি ; মহাদেবী, শুম্ভনিশুম্ভঘাতিনী, তবে অবধান করো। কোনো-একটি বিষয়ের অনেকগুলি দলিল হইলে তাহার মধ্যে প্রধানখানিতে নিয়মিত স্ট্যাম্প, অপরগুলিতে এক টাকা অনুসারে দিতে হয় ! ইনকমট্যাক্স, বাঙ্গিন্ডাক, মনিঅৰ্ডার, সর্বশেষ সাউথ ইস্টারন স্টেট রেলওয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়ার কথা বিবৃত করিয়া যবনিকাপাতন । এই অঙ্কে যে ব্যক্তি সিংহ সাজিবে তাহার কিঞ্চিৎ আপত্তি থাকিতে পারে ; অতিক্ষণ দুই জনকে স্কন্ধে করিয়া হামাগুড়ির ভঙ্গিতে নিশ্চল দাড়াইয়া থাকা কঠিন ব্যাপার ! সেইজন্য উকিল-খরচা-কথনের মধ্যে সিংহ একবার গর্জন করিয়া উঠিবে, “ম, আমার ক্ষুধা পাইয়াছে।” মা বলিলেন, “তা, যাও বাছা, সাহারা মরুতে তোমার শিকার ধরিয়া খাও গে, আমরা নীচে নামিয়া বসিতেছি । হামাগুড়ি দিয়া সিংহ নিস্ক্রান্ত হইবে। এই সুযোগে দর্শকেরা সিংহের আবাসস্থলের পরিচয় পাইবেন ।— আমার কোনো কোনো নব্যবন্ধু পরামর্শ দিয়াছিলেন, ইহার মধ্যে মধ্যে নদীভূঙ্গীর হাস্যরসের অবতারণা করিলে ভালো হয় । কিন্তু তাহা হইলে নাটকের গৌরব লাঘব হয় । এইজন্য হাস্যপ্ৰগলভ্যতা আমি সযত্নে দূরে পরিহার করিয়াছি। ভবিষ্যতে সুশ্রুত ও চরক -সংহিতা নাট্যাকারে