পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

లిe e রবীন্দ্র-রচনাবলী অস্তরের ধন হয়ে জামার চিরজীবনপথের সম্বল হয়ে থাক। আমারই অন্তরাত্মার মধ্যে তোমার যে সত্য, যে জ্যোতি, ষে অমৃত, যে প্রকাশ রয়েছে তোমার প্রসন্নতার দ্বারা যখন তাকে উপলব্ধি করব তখনই রক্ষা পাব। ১৪ ফাৰ্ত্তন I বৈরাগ্য ধাজ্ঞবল্ক্য বলেছেন— ন বা অরে পুত্রস্ত কামায় পুত্র: প্রিয়ে ভবতি—আত্মনন্ত কামায় পুত্র; প্রিয়ো ভবতি । অর্থাং i 品 পুত্রকে কামনা করছ বলেই যে পুত্র তোমার প্রিয় হয় তা নয় কিন্তু আত্মাকেই কামনা করছ বলে পুত্র थिग्न झग्न । এর তাৎপর্ব হচ্ছে এই ষে, আত্মা পুত্রের মধ্যে আপনাকেই অনুভব করে বলেই পুত্র তার আপন হয়, এবং সেইজন্তেই পুত্রে তার আনন্দ । আত্মা যখন স্বার্থ এবং অহংকারের গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে নিরবচ্ছিন্ন একলা হয়ে থাকে তখন সে বড়োই মান হয়ে থাকে, তখন তার সত্য স্ফর্তি পায় না। এইজন্তেই আত্মা পুত্রের মধ্যে মিত্রের মধ্যে নানা লোকের মধ্যে নিজেকে উপলব্ধি করে আনন্দিত হয়ে থাকে কারণ তার সত্য পূর্ণতর হয়ে উঠতে থাকে । ছেলেবেলায় বর্ণপরিচয়ে যখন ক খ গ প্রত্যেক অক্ষরকে স্বতন্ত্র করে শিখছিলুম তখন তাতে আনন্দ পাইনি। কারণ, এই স্বতন্ত্র অক্ষরগুলির কোনো সত্য পাচ্ছিলুম না। তার পরে অক্ষরগুলি যোজনা করে যখন "কর” “খল” প্রভৃতি পদ পাওয়া গেল তখন অক্ষর আমার কাছে তার তাৎপর্য প্রকাশ করাতে আমার মন কিছু কিছু স্থখ অনুভব করতে লাগল। কিন্তু এরকম বিচ্ছিন্ন পদগুলি চিত্তকে যথেষ্ট রস দিতে পারে না—এতে ক্লেশ এবং ক্লান্তি এসে পড়ে । তার পরে আজও আমার স্পষ্ট মনে আছে যেদিন “জল পড়ে” “পাতা নড়ে” বাক্যগুলি পড়েছিলুম সেদিন ভারি আনন্দ হয়েছিল, কারণ, শব্দগুলি তখন পূর্ণতর অর্থে ভরে উঠল। এখন শুদ্ধমাত্র "জল পড়ে” “পাতা নড়ে” আবৃত্তি করতে মনে স্বর্থ হয় না বিরক্তিবোধ হয়, এখন ব্যাপক অর্থযুক্ত বাক্যাবলীর মধ্যেই শৰাবিন্যাসকে সার্থক বলে উপলব্ধি করতে চাই । 酶 o বিচ্ছিন্ন আত্মা তেমনি বিচ্ছিন্ন পদের মতো । তার একার মধ্যে তার তাৎপর্যকে পূর্ণরূপে পাওয়া যায় না। এইজপ্তেই আত্মা নিজের সত্যকে নানার মধ্যে উপলব্ধি করতে চেষ্টা করে । সে যখন আত্মীয় বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে যুক্ত হয় তখন সে নিজের