পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বন-ফুল খুলিয়া ফেলিনু এই কবরীবন্ধন, এখনো ফিরিবি না। হরিণের দল ? এই দেখ— এই দেখা ফেলিয়া বসন পরিনু সে পুরাতন গাছের বাকল ! যাক তবে, যাক চালে- যে যায় যেখানে শুক পাখি উড়ে যাক সুদূর বিমানে । আয়- আয়- আয় তুই আয় রে মরণ ! বিনাশশক্তিতে তোর নিভা। এ যন্ত্রণা ! পৃথিবীর সাথে সব ছিড়িব বন্ধন ! বাহিতে অনিল হদে আর তো পারি না ! নীরদ স্বরাগে আছে, আছেন জনক স্নেহময়ী মাতা মোর কোল রাখি পাতি সেথায় মিলিব গিয়া, সেথায় যাইব ভোর করি জীবনের বিষাদের রাতি ! নীরদে আমাতে চডি প্ৰদোষতারায় অস্তগামী তপনেরে করিব বীক্ষণ, এত কাল যার কোলে কাটিল জীবন । শুকতারা প্ৰকাশিবে উষার কাপোলে তখন রাখিয়া মাথা নীরদের কোলে— অশ্রািজলসিক্ত হয়ে কব সেই কথা পৃথিবী ছাড়িয়া এনু পেয়ে কোন ব্যথা ! নীরদের আঁখি হতে ব’বে অশ্রািজল ! মুছিব হরষে আমি তুলিয়া আঁচল ! আয়— আয়— আয় তুই, আয় রে মরণ ! পৃথিবীর সাথে সব ছিড়িব বন্ধন !” এত বলি ধীরে ধীরে উঠিল। শিখর ! দেখে বালা নেত্ৰ তুলেচারি দিক গেছে খুলে উপত্যকা, বনভূমি, বিপিন, ভূধর ! তটিনীর শুভ্ৰ রেখানেত্রপথে দিল দেখাবৃক্ষচ্ছায়া দুলাইয়া ব'হে ব'হে যায় ! ছোটো ছোটো গাছপালাসংকীর্ণ নিবরিমালাসবি যেন দেখা যায় রেখা-রেখা-প্ৰায় । 6 ONS