পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (চতুর্দশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

br8V রবীন্দ্র-রচনাবলী এই প্রবন্ধে যে ‘ভাঙা বাড়ি, “ভূতুড়ে বাড়ি-র কথা বলা হইয়াছে (পৃ. ৩৮০), হেমলতা দেবীকে লিখিত রবীন্দ্রনাথের একটি পত্র সেই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য । পত্ৰখানি হেমলতা দেবীর একটি প্রবন্ধের সহিত ‘বঙ্গলক্ষ্মী’ পত্রিকায় (আশ্বিন ১৩৪৬) প্ৰকাশিত হইয়াছিল । নিম্নে রবীন্দ্রনাথের পত্ৰখানি হেমলতা দেবীর প্রবন্ধের শেষাংশ-সহ মুদ্রিত হইল।-- -- তার [রবীন্দ্রনাথ ] ভ্রাতুষ্পপুত্র আমার স্বগীয় স্বামীর [ দ্বিপেন্দ্রনাথ ] উপর ভার দিয়ে গিয়েছিলেন তিনি তার বিদ্যালয়ের । দখল নেওয়ার আদেশ এসেছিল তারই কাছে । দখল নিতে গিয়ে দেখেন, বাড়িটির বহু খিলান ফটা, ছাদ দিয়ে জল পড়ে, দেওয়ালের গায়ে ফাটল হয়ে গাছ রেরিয়েছে নানারকম । বললেন, অনেক টাকা খরচ না করলে এ বাড়ি বাস-যোগ্য হবে না । আমাকে বললেন, সেই খবর কবিকে চিঠি লিখে জানাতে । খবর পেয়ে উত্তরে কবি যে পত্র লেখেন সেই পত্ৰখানি 508, W. High Street Urbana Illinois ২৩শে অগ্রহায়ণ ১৩১৯ હૈં কল্যাণীয়াসু, বীেমা— তোমাদের কাছে সুরুলের বাড়ির বর্ণনা শুনে বোঝা গেল, আমার ভাগ্যের কিছু পরিবর্তন হয় নি । কেনাবেচার বাজারে আমাকে চিরদিন ঠকাতেই হবে- ঠকার সীমা যদি ঐ টাকার থলির মধ্যেই বদ্ধ থাকে তা হলেও তেমন ক্ষতি নেই, ফাড়া তা হলে ঐখানেই কেটে যায়। যা হােক, কাজ যখন সম্পূর্ণ সমাপ্ত হয়ে গেছে তখন লোকসানের দিকেই সমস্ত ঝোকটা দিয়ে পরিতাপ করে কোনো ফল নেই- ওর মধ্যে যতটুকু লাভ আছে, তা যত সামান্যই হােক, সেইটোকেই প্রচুর জ্ঞান করে তাকে যথাযোগ্য ব্যবহারে লাগাবার চেষ্টা করা কর্তব্য- ওর দেয়াল ফাটা, ওর গাছগুলো বুড়ো, ওর চারিদিকে জঙ্গল এ বলে মন ভারী করে বসে থাকলে ঠকাটিকে কেবল দ্বিগুণ বাড়িয়ে তোলা হবে। যে আটহাজার টাকা আমার গেছে, সে তো গেছেই— কিন্তু তার বদলে যেটুকু পেয়েছি তাকে পেয়েছি বলেই গণ্য করতে হবে । আমার ফিরে যাওয়া পর্যন্ত ওটাকে কী রকমে কাজে লাগাতে পারা যেতে পারে তা এতদূর থেকে বলা এবং ব্যবস্থা করা আমার পক্ষে শক্ত । তোমরা সকলে পরামর্শ করে যেরকম ভালো বোধ করা তাই করে । আর কিছু না হােক, জমি অনেকটা আছে। ওর মধ্যে, কিছু কিছু চাষ হতে পারে না কি ? সন্তোষের গোয়ালঘরের' কল্যাণে গোবরের সারের তো অভাব হবে না । এখন থেকে ফল গাছগুলোর গোড়া খুঁড়ে ওতে যথেষ্ট পরিমাণ সার দিতে পারলে হয়তো আমের সময় ছেলেদের জন্য কিছু VNN 98 (QC\S °CS . হলকর্ষণ : নির্মলকুমারী মহলানবিশকে লিখিত একখানি চিঠি এই অভিভাষণ-প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য “আজ সুরুল হলচালন উৎসব হবে । লাঙল ধরতে হবে আমাকে । বৈদিক মন্ত্ৰ-যোগে কাজটা করতে হবে বলে এর অসম্মানের অনেকটা হ্রাস হবে । বহু হাজার বৎসর পূর্বে এমন একদিন ছিল যখন হাল-লাঙল কাধে করে মানুষ মাটিকে জয় করতে বেরিয়েছিল, তখন হলধরকে দেবতা বলে দেখেছে, তার নাম দিয়েছে বলরাম। এর থেকে বুঝবে নিজের যন্ত্ৰধারী স্বরূপকে মানুষ কতখানি সম্মান করেছে। বিষ্ণুকে বলেছে চক্ৰধারী, কেননা এই চক্র হচ্ছে বস্তুজগতে মানুষের বিজয়ীরথের বাহন। মাটি থেকে মানুষ ফসল। আদায় করেছে এটা তার বড়ো কথা নয়, বড়ো কথা হচ্ছে হাল-লাঙলের উদভাবন। এমন জন্তু আছে যে আপনার দাত দিয়ে