পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সোনার তরী মৃদুর্গম দূরদেশ,— পথশূন্ত তরুশূন্ত প্রান্তর অশেষ, মহাপিপাসার রঙ্গভূমি ; রৌদ্রালোকে জলন্ত বালুকারাশি সূচি বিধে চোখে ; দিগন্তবিস্তৃত যেন ধূলিশয্যা পরে জরাতুরা বস্থদ্ধর লুটাইছে পড়ে তপ্তদেহ, উষ্ণশ্বাস বহ্নিজালাময়, শুষ্ককণ্ঠ, সঙ্গহীন, নিঃশবা, নির্দয় । কতদিন গৃহপ্রান্তে বসি বাতায়নে দূরদূরাস্তের দৃপ্ত আঁকিয়াছি মনে চাহিয়া সম্মুখে ;— চারিদিকে শৈলমালা, মধ্যে নীল সরোবর নিস্তব্ধ নিরালা, স্ফটিকনির্মল স্বচ্ছ ; খণ্ড মেঘগণ মাতৃস্তনপানরত শিশুর মতন পড়ে আছে শিখর অঁাকড়ি ; হিমরেখ নীলগিরিশ্ৰেণী পরে দূরে যায় দেখা দৃষ্টিরোধ করি’, যেন নিশ্চল নিষেধ উঠিয়াছে সারি সারি স্বর্গ করি ভেদ যোগমগ্ন ধূর্জটির তপোবন-দ্বারে। মনে মনে ভ্ৰমিয়াছি দূর সিন্ধুপারে মহামেরুদেশে— যেখানে লয়েছে ধরা অনন্তকুমারীব্রত, হিমবস্ত্রপরা, নিঃসঙ্গ নি:স্পৃহ, সর্ব-আভরণহীন ; যেথা দীর্ঘরাত্রিশেষে ফিরে আসে দিন শব্দশূন্ত সংগীতবিহীন ; রাত্রি আসে – ঘুমাবার কেহ নাই, অনন্ত আকাশে অনিমেষ জেগে থাকে নিজাতন্দ্রাহত শূন্তশয্যা মৃতপুত্রা জননীর মতো । নূতন দেশের নাম যত পাঠ করি, বিচিত্র বর্ণনা শুনি, চিত্ত অগ্রসরি $ Hම්