পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গান্ধাৱী । কাহিনী ধর্মাধিপ নামে, কর্তব্যের প্রবর্তনে, ফিরিয়া লাগিবে আসি দণ্ডদাতা ভূপে— ন্যায়ের বিচার তব নির্মমতাররূপে পাপ হয়ে তোমারে দাগিবে । ত্যাগ করো পাপী দুৰ্যোধনে । প্রিয়ে, সংহর, সংহর তব বাণী । ছিড়িতে পারি। নে মোহডোর, ধৰ্মকথা শুধু আসি হানে সুকঠোর ব্যৰ্থ ব্যথা । পাপী পুত্ৰ ত্যাজ্য বিধাতার, তাই তারে ত্যজিতে না পারি— আমি তার একমাত্র । উন্মত্ত-তরঙ্গ-মাঝখানে যে পুত্ৰ সঁপেছে অঙ্গ তারে কোন প্ৰাণে ছাড়ি যাব ? উদ্ধারের আশা ত্যাগ করি তবু তারে প্রাণপণে বক্ষে চাপি ধরি, তারি সাথে এক পাপে বঁপ দিয়া পড়ি, এক বিনাশের তলে তলাইয়া মরি অকাতরে— অংশ লই তার দুৰ্গতির, অর্ধ ফল ভোগ করি তার দুর্মতির, সেই তো সাস্তুনা মোর- এখন তো আর নাই পথ— ঘটেছে যা ছিল ঘটিবার, ফলিবে যা ফলিবার আছে । হে আমার অশান্ত হৃদয়, স্থির হও । নতশিরে প্ৰতীক্ষা করিয়া থাকো বিধির বিধিরে ধৈর্য ধরি। যেদিন সুদীর্ঘ রাত্ৰি-’পরে সদ্য জেগে উঠে কাল সংশোধন করে আপনারে, সেদিন দারুণ দুঃখ দিন । দুঃসহ উত্তাপে যথা স্থির গতিহীন ঘুমাইয়া পড়ে বায়ু— জাগে ঝঞাঝড়ে অকস্মাৎ, আপনার জড়ত্বের পরে করে আক্রমণ, অন্ধ বৃশ্চিকের মতো দীপ্ত বজশ্বল, সেইমত কাল যাবে জাগে, তারে সভয়ে অকাল কহে সবে । লুটাও লুটাও শির- প্ৰণাম, রমণী, সেই মহাকালে ; তার রথচক্ৰধ্বনি ওই শুনা যায় । তোর আর্ত জর্জরিত হৃদয় পাতিয়া রাখা তার পথতলে । brs