পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (তৃতীয় খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SA8 রবীন্দ্র-রচনাবলী দুকড়ি । ও-সব গুজবের কথা শোনেন কেন ? প্রথম। কী বিনয় ! কেবল মশায়ের নামই শ্রুত ছিলুম, আজ চক্ষুকর্ণের বিবাদভঞ্জন হল। দুকড়ি । (স্বগত) এখন আসল কথাটা যে পাড়লে হয়। বিস্তর লোক বসে আছে। (প্রকাশ্যে) তা মশায়ের কী আবশ্যক ? প্ৰথম । দেশের উন্নতি-উদ্দেশে হৃদয়েরদুকড়ি । আজ্ঞে, সে-সব কথা বলাই বাহুল্যপ্রথম। তা ঠিক। মশায়ের মতো মহানুভব ব্যক্তি র্যারা ভারতভূমির— দুকড়ি । সমস্ত মানছি, মশায়, অতএব ও অংশটুকুও ছেড়ে দিন। তার পরে— প্রথম । বিনয়ী লোকের স্বভাবই এই যে, নিজের গুণানুবাদ— দুকড়ি। রক্ষে করুন মশায়, আসল কথাটা বলুন । প্ৰথম । আসল কথা কী জানেন— দিনে দিনে আমাদের দেশ অধোগতি প্ৰাপ্ত হচ্ছে— দুকড়ি । সে কেবলমাত্র কথা সংক্ষেপ করতে না জানার দরুন । প্রথম। আমাদের স্বর্ণশস্যশালিনী পুণ্যভূমি ভারতবর্ষ দারিদ্র্যের অন্ধকূপে— দুকড়ি । (সকাতরে মাথায় হাত দিয়া বসিয়া) বলে যান। প্রথম। দারিদ্র্যের অন্ধকূপে দিনে দিনে নিমজ্জামানা— দুকড়ি । (কাতর স্বরে) মশায়, বুঝতে পারছি নে । প্রথম। তবে আপনাকে প্রকৃত ব্যাপারটা বলিদুকড়ি । (সানন্দে সাগ্রহে) সেই ভালো । প্রথম । ইংরেজেরা লুঠ করছে। দুকড়ি। এ তো বেশ কথা। প্রমাণ সংগ্ৰহ করুন, ম্যাজিষ্ট্রেটের কোর্টে নালিশ রুজু করি প্রথম। ম্যাজিষ্ট্রেটও লুঠছে। দুকড়ি। তবে ডিস্ট্রিক্ট জজের আদালত— প্রথম । ডিস্ট্রিক্ট জজ তো ডাকাত । দুকড়ি। (অবাকভাবে) আপনার কথা আমি কিছু বুঝতে পারছি নে । প্ৰথম । আমি বলছি, দেশের টাকা বিদেশে চালান যাচ্ছে । দুকড়ি । দুঃখের বিষয় । প্ৰথম । তাই একটা সভা দুকড়ি । (সচকিত) সভা ! প্রথম । এই দেখুন-না খাতা । দুকড়ি । (বিস্ফারিতনেত্রে) খাতা ! প্ৰথম । কিঞ্চিৎ চান্দাদুকড়ি । (চৌকি হইতে লাফাইয়া উঠিয়া) চাদা ! বেরোও— বেরোও— বেরোও— তাড়াতাড়ি চৌকি-উলটায়ন, কালি-ফেলন, প্রথম ব্যক্তির বেগে প্ৰস্থানোদ্যম, পতন, উত্থান, গোলমাল দ্বিতীয় ব্যক্তির প্রবেশ দুকড়ি। কী চাই ? দ্বিতীয় । মহাশয়ের দেশবিখ্যাত বদন্যতা দুকড়ি । ও-সব হয়ে গেছে— হয়ে গেছে— নতুন কিছু থাকে তো বলুন । দ্বিতীয় । আপনার দেশহিতৈষিতা