হাস্যকৌতুক 〉br○ বালক-সমেত পারেশনাথের প্রবেশ পরেশ । (দৌলতকে প্ৰণাম করিয়া বালকের প্রতি) তোর জ্যাঠামশায়কে প্ৰণাম কর। দাদা, এই লও তোমার ভ্রাতুষ্পপুত্র । দৌলত। আমার ভ্রাতুষ্পপুত্ৰ ! পরেশ । যাকে চলিত বাংলায় বলে ভাইপো । দাদা যে একেবারে অবাক ।। ভ্ৰাতৃ শব্দের ষষ্ঠীতে হয় ভ্রাতুঃ, তার উপরে পুত্র শব্দ যোগ করলেই হল ভ্রাতুষ্পপুত্র। স্বয়ং পাণিনি বােপদেব রয়েছেন, অন্য প্রমাণের প্রয়োজন কী ? অতএব ইনি হলেন ভাইপো । কানাই। আপনার ছেলেটি কী করেন ? পরেশ । ওকে নিজেই পড়াচ্ছিলুম। হ্রস্ব ই পর্যন্ত সেরে দীর্ঘ ঈতে এমনি আটকা পড়ল যে ভাবলুম, দৌলদা যখন আছেন তখন ছেলের লেখাপড়ার দরকার কী ? যে বেটার হ্রস্ব-দীর্ঘ জ্ঞান নেই তার পক্ষে বাবা-জ্যাঠা দুই সমান। কেমন কিনা ? কানাই | সমান বৈকি । পরেশ । দাদা বলেছেন, নিজের ক্ষুধা হেয় জ্ঞান করে পরের ক্ষুধানিবৃত্তির সুখ একমাত্র একান্নাবতী পরিবারেই সম্ভব। শুনেই ঠাওরালুম, এ সুখ দাদা নিশ্চয়ই অনেক দিন পাননি। যদি বা পেয়ে থাকেন বিস্মৃত হয়েছেন। তাই নিতান্ত মমতাপরবশ হয়ে ছেলেটিকে এখানে নিয়ে এলুম। রাবণের চুলো যদি কোথাও জ্বলে সে এর পেটের মধ্যে । নটবরের প্রবেশ নটবর। (দৌলতের কান মলিয়া) কী রে শালা ! শুনলুম নাকি শালার শোকে সভায় দাঁড়িয়ে কেঁদে ভাসিয়ে দিয়েছিস ? দৌলত। কে হে তুমি বেল্লিক ! ভদ্রলোকের কানে হাত দাও! নটবর। ভগ্নীপতির কান মলব না তো কি কান ভাড়া করে এনে মলব ! কী বলেন মশায় ? কানাই। কথাটা তো ঠিক বটে । দৌলত । কী বল হে কানাই! আমার স্ত্রীই নেই, তো আবার শালা কিসের ? নটবর। তোমারই যেন স্ত্রী নেই, তাই বলে আর কারও স্ত্রী নেই ? একটু ভেবে দেখে-না। দৌলত ৷ স্ত্রী তো অনেকেরই আছে, তা আর ভাবতে হবে কী ! নটবর । (হাসিয়া।) তবে ? দৌলত । (সরোষে) তবে কী ! তুমি আমার শালা কোন সম্পর্কে ? নটবর। কেন, দাদার সম্পর্কে। দাদা আছেন তো ! শলাই যেন ভাড়ালে, কিন্তু দাদা বেকবুল গেলে তো চলবে না ! দৌলত । আমি তো জানতেমা নেই, কিন্তু আজ যেরকম দেখছি তাতে— নটবর। থাক, তা হলেই তাে চুকে গেল। বেশি বকবিকিতে কাজ কী ? ভদ্রলােক বসে আছেন, এর সামনে কে শালা আর কে শালা নয় তা নিয়ে তকরার করা ভালো দেখায় না। (দৌলতের পশ্চাৎ ইহঁতে তাকিয়া টানিয়া লইয়া) একটু জিরোনো যাক, এক ছিলিম তামাক ডাকো। ফলমূলমিষ্টান্ন লইয়া ভূত্যের প্রবেশ তৃত্য । (দৌলতকে) আপনার জলখাবার। দৌলত । (সরোষে) বেটা, তোকে এখানে কে খাবার আনতে বলেছে ? বাড়ি-ভিতর নিয়ে যা ! পরেশ। বিলক্ষণ, তাতে দােষ হয়েছে কী ! (ভূত্যের প্রতি) ওরে তুই দিয়ে যা, এদিকে দিয়ে যা। থালা লইয়া আহার-আরম্ভ
