পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

>ԳՀ রবীন্দ্র-রচনাবলী নেপথ্যে । ই পাচ্ছি। সুদৰ্শন। কী রকম দেখছ? নেপথ্যে । আমি দেখতে পাচ্ছি তোমার মধ্যে দেহ নিয়েছে যুগযুগাস্তরের ধ্যান, লোকলোকান্তরের আলোক, বহু শত শরৎ-বসন্তের ফুল ফল । তুমি বহুপুরাতনের, নূতন রূপ। সুদৰ্শন । বলে বলে এমনি ক’রে বলে । মনে হচ্ছে যেন অনাদিকালের গান জন্মজন্মান্তর থেকে শুনে আসছি। কিন্তু প্রভু, এ যে কঠিন কালো লোহার মতো অন্ধকার, এ যে আমার উপর চেপে আছে ঘুমের মতে, মুছার মতে, মৃত্যুর মতো । এ জায়গায় তোমাতে আমাতে মিল হবে কেমন ক’রে ? না না, হবে না মিলন, হবে না। এখানে নয়, চোখের দেখার জগতেই তোমাকে দেখব—সেইখানেই যে আমি আছি । নেপথ্যে । আচ্ছা দেখো । তোমাকে নিজে চিনে নিতে হবে । সুদৰ্শন । চিনে নেব, লক্ষ লোকের মধ্যে চিনে নেব, ভূল হবে না । নেপথ্যে। বসন্ত-পূর্ণিমার উংসবে সকল লোকের মধ্যে আমাকে দেখবার চেষ্টা ক’রো । সুরঙ্গমা । সুরঙ্গমা। কী প্রভু। নেপথ্যে। বসন্ত-পূর্ণিমার উংসব তো এল। সুরঙ্গমা । আমাকে কী কাজ করতে হবে ? নেপথ্যে । আজ তে মার কাজের দিন নয়, সাজের দিন । পুষ্পবনের আনন্দে মিলিয়ে দিয়ে প্রাণের আনন্দ । সুরঙ্গমা। তাই হবে প্ৰভু । নেপথ্যে । সুদর্শনা আমাকে চোখে দেখতে চান । সুরঙ্গমা। কোথায় দেখবেন ? নেপথ্যে। যেখানে পঞ্চমে বঁশি বাজবে, পুষ্পকেশরের ফাগ উড়বে, আলোয় ছায়ায় হবে গলাগলি সেই দক্ষিণের কুঞ্জবনে । সুরঙ্গমা। চোখে ধাধা লাগবে না ? নেপথ্যে। সুদর্শনার কৌতুহল হয়েছে। সুরঙ্গমা । কৌতুহলের জিনিস তো পথে ঘাটে ছড়াছড়ি । তুমি ८१ কৌতুহলের অতীত ।