পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

R8 R রবীন্দ্র-রচনাবলী ছেলে মাকে গিয়ে বললে, “মা, দেবতাকে অনেককাল ছেড়েছি, এমন অবস্থায় আমাকে দেবতার ছাড়াটা নেহাত বাহুল্য। কিন্তু জানি বেড়ার ফাকের মধ্য দিয়ে হাত বাড়ালে তোমার প্রসাদ মিলবেই। ঐখানে কোনো দেবতার দেবতা।গিরি খাটে না, তা যত বড়ো জাগ্ৰত হােন-না। তিনি।” মা চোখের জল মুছতে মুছতে আঁচল থেকে খুলে ওকে একখানি নোট দিতে গেলেন। ও বললে, “ঐ নোটখানায় যখন আমার অত্যন্ত বেশি দরকার আর থাকবে না। তখনই তোমার হাত থেকে নেব । অলক্ষ্মীর সঙ্গে কারবার করতে জোর লাগে, বাঙ্কনেট, হাতে নিয়ে তাল ঠোকা যায় না ।” অভীকের সম্বন্ধে আরো দুটাে-একটা কথা বলতে হবে । জীবনে ওরা দুটি উলটাে জাতের শখ ছিল, এক কলকারখানা জোড়াতাড়া দেওয়া, আর-এক ছবি আঁকা। ওর বাপের ছিল তিনখানা মোটরগাড়ি, র্তার মফস্বল-অভিযানের বাহন। যত্নবিদ্যায় ওর হাতে-খড়ি সেইগুলো নিয়ে। তা ছাড়া তার ক্লায়েন্টের ছিল মোটরের কারখানা, সেইখানে ও শখ করে বেগার খেটেছে অনেকদিন । অভীক ছবি আঁকা শিখতে গিয়েছিল সরকারি আর্টস্কুলে। কিছুকালের মধ্যেই ওর এই বিশ্বাস দৃঢ় হল যে, আর বেশিদিন শিখলে ওর হাত হবে কলে-তৈরি, ওর মগজ হবে হচে-ঢালা । ও আর্টিস্ট, সেই কথাটা প্রমাণ করতে লাগল নিজের জোর আওয়াজে । প্রদর্শনী বের করলে ছবির, কাগজের বিজ্ঞাপনে তার পরিচয় বেরল। আধুনিক ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ আর্টিস্ট অভীককুমার, বাঙালিটিশিয়ান । ও যতই গর্জন করে বললে “আমি আটিস্ট, ততই তার প্রতিধ্বনি উঠতে থাকলে একদল লোকের ফাকা মনের গুহায়, তারা অভিভূত হয়ে গেল। শিঘ্য এবং তার চেয়ে বেশি সংখ্যক শিষ্য জমল ওর পরিমণ্ডলীতে । তারা বিরুদ্ধদলকে আখ্যা দিল ফিলিস্টাইন। বলল বুর্জোয়া । অবশেষে দুদিনের সময় অভীক আবিষ্কার করলে যে তার ধনী পিতার তহবিলের কেন্দ্র থেকে আটিস্টের নামের পরে যে রাজতচ্ছটাি বিছুরিত হত। তারই দীপ্তিতে ছিল তার খ্যাতির অনেকখানি উজ্জ্বলতা। সঙ্গে সঙ্গে সে আর-একটি তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিল যে অর্থভাগ্যের বঞ্চনা উপলক্ষ করে মেয়েদের নিষ্ঠায় কোনো ইতারবিশেষ ঘটে নি। উপসিকরা শেষ পর্যন্ত দুই চক্ষু বিস্ফারিত করে উচ্চমাধুর কণ্ঠে তাকে বলছে আর্টিস্ট । কেবল নিজেদের মধ্যে পরস্পরকে সন্দেহ করেছে যে স্বয়ং তারা দুই-একজন ছাড়া বাকি সবাই আর্টের বোঝে না কিছুই, ভণ্ডামি করে, গা জ্বলে যায়। অতীকের জীবনে এর পরবর্তী ইতিহাস সুদীর্ঘ এবং অস্পষ্ট । ময়লা টুপি আর তেলকালিমাখা নীলরঙের জামা-ইজের পরে বার্ন কোম্পানির কারখানায় প্রথমে মিক্সিগিরি ও পরে হেডমিত্রির কাজ পর্যন্ত চালিয়ে দিয়েছে। মুসলমান খালসিদের দলে মিশে চার পয়সার পরোটা আর তার চেয়ে কম দামের শাস্ত্রনিবিন্ধ পশুমাংস খেয়ে ওর দিন কেটেছে সন্তায় । লোকে বলেছে, ও মুসলমান হয়েছে ; ও বলেছে, মুসলমান কি নাস্তিকের চেয়েও বড়ো। হাতে যখন কিছুটাকা জমল তখন অজ্ঞাতবাস থেকে বেরিয়ে এসে আবার সে পূর্ণ পরিস্ফুট আর্টিস্টরূপে বোহেমিয়ানি করতে লেগে গেল। শিষ্য জুটল, শিষ্য জুটল। চশমাপরা তরুণীরা তার স্টুডিয়োতে আধুনিক বে-আবু রীতিতে যে-সব নগ্নমনস্তত্বের আলাপ-আলোচনা করতে লাগল, ঘন সিগারেটের ধোয়া জমল তার কালিমা আবৃত করে। পরম্পর পরস্পরের প্রতি কটাক্ষপাত ও অঙ্গুলিনির্দেশ করে বললে, পজিটিভূলি ভালগার। বিভা ছিল এই দলের একেবারে বাইরে । কলেজের প্রথম ধাপের কাছেই অতীকের সঙ্গে ওর। আলাপ শুরু । অতীকের বয়স তখন আঠারো, চেহারায় নবযৌবনের তেজ বকবক করছে, আর তার নেতৃত্ব বড়োবয়সের ছেলেরাও স্বভাবতই নিয়েছে স্বীকার করে। ব্ৰাহ্মসমাজে মানুষ হয়ে পুরুষদের সঙ্গে মেশবার সংকোচ বিভার ছিল না। কিন্তু কলেজে বাধা ঘটল। তার প্রতি কোনো কোনো ছেলের অশিষ্টতা হাসিতে কটাক্ষে ইঙ্গিতে আভাসে স্কুরিত হয়েছে। কিন্তু একদিন একটি শহরে ছেলের অভদ্রতা বেশ একটু গায়ে-পড়া হয়ে প্রকাশ পেল। সেটা অতীকের চোখে পড়তেই সেই ছেলেটাকে বিভার কাছে হিন্দু হিন্দু করে টেনে নিয়ে এসে বললে, SYK rLLS S KKCBLB BB DLDDTBB BBLBBB BLBLB BDBBSSDB BY BB BDB B BK DDBBBBTBLSS LBD BBBB BBBLB KBB B BBLBMMS BrBuBDDBB BBLLB BY