পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/২৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

टिन | Rł6ł বী, আমার মধুকরী, জগতে সব চেয়ে ভালোবেসেছি তোমাকে । সেই ভালোবাসার কোনো একটা অসীম সত্য-ভূমিকা আছে যদি মনে করা যায়, আর তাকেই যদি বল তোমাদের ঈশ্বর, তা হলে ষ্ঠার দুয়ার আর তোমার দুয়ার এক হয়ে রইল। এই নাস্তিকের জন্যে। আবার আমি ফিরব- তখন । আমার মত, আমার বিশ্বাস, সমন্ত চোখ বুজে সমৰ্পণ করে দেব তোমার হাতে ; তুমি তাকে পৌঁছিয়ে দিয়ে তোমার তীর্থপথের শেষ ঠিকানায়, যাতে বুদ্ধির বাধা নিয়ে তোমার সঙ্গে এক মুহুর্তের বিচ্ছেদ আর কখনাে না ঘটে। তোমার কাছ থেকে আজ দূরে এসে ভালোবাসার অভাবনীয়তা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে আমার মনের মধ্যে, যুক্তিতর্কের কঁটার বেড়া পায় করিয়ে দিয়েছে আমাকে- আমি দেখতে পাচ্ছি। তোমাকে লোকাতীত মহিমায়। এতদিন বুঝতে চেয়েছিলুম বুদ্ধি দিয়ে, এবার পেতে চাই আমার সমন্তকে দিয়ে । তোমার নাভিক ভক্ত अशैक viña yese শেষ কথা জীবনের প্রবহমান ঘোলা রঙের হ-য-ব-র-লার মধ্যে হঠাৎ যেখানে গল্পটা আপন রূপ ধরে সদ্য দেখা দেয়, তার অনেক পূর্ব থেকেই নায়ক-নায়িকারা আপন পরিচয়ের সূত্র গেঁথে আসে। পিছন থেকে সেই প্রাকৃগায়িক ইতিহাসের ধারা অনুসরণ করতেই হয়। তাই কিছু সময় নেব, আমি যে কে সেই কথাটাকে পরিষ্কার করবার জন্যে। কিন্তু নামধাম ভঁড়াতে হবে। নইলে জানাশোনা মহলের জবাবদিহি সামলাতে পারব না। কী নাম নেব। তাই ভাবছি, রোম্যান্টিক নামকরণের দ্বারা গোড়া থেকেই গল্পটাকে বসন্তরাগে পঞ্চমসুরে বাধতে চাই নে। নবীনামাধব নামটা বোধ হয় চলে যেতে পারবে, ওর বান্তবের শামলা রঙটা ধুয়ে ফেলে করা যেতে পারত নবারুশ সেনগুপ্ত ; কিন্তু তা হলে ধটি শোনােত না, গল্পটা নামের বড়াই করে লোকের বিশ্বাস হারাত, লোকে মনে করত ধারকরা জামিয়ার পরে সাহিত্যসভায় বাবুয়ানা করতে এসেছে। আমি বাংলাদেশের বিপ্লবীদলের একজন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের মহাকর্ষশক্তি আভামানতীরের খুব কাছাকাছি টান মেরেছিল। নানা বঁকা পথে সি, আই ডি-র ফাস এড়িয়ে এড়িয়ে গিয়েছিলুম আফগানিস্তান পর্যন্ত । অবশেষে স্ট্রেীচেছি আমেরিকায় খালসির কাজ নিয়ে। পূর্ববঙ্গীয় জেদ ছিল মজ্জায়, একদিনও ভুলি নি যে, ভারতবর্ষের হাতপায়ের শিকলে উখো ঘষতে হবে দিনরাত যতদিন বেঁচে থাকি। কিন্তু বিদেশে কিছুদিন থাকতেই একটা কথা নিশ্চিত বুঝেছিলুম, আমরা যে প্ৰণালীতে বিপ্লবের পালা শুরু করেছিলুম, সে যেন আতশবাজিতে পটকা ছোড়ার মতো, তাতে নিজের পোড়াকপাল পুড়িয়েছি অনেকবার, দাগ পড়ে নি ব্রিটিশ রাজতত্তে । আগুনের উপর পতঙ্গের অন্ধ আসক্তি। যখন সদৰ্পে ঝাপ দিয়ে পড়েছিলুম। তখন বুঝতে পারি নি, সেটাতে ইতিহাসের যজ্ঞানল স্বালানো হচ্ছে না, জ্বালাচ্ছি নিজেদের খুব ছোটাে ছোটাে চিন্তানল। ইতিমধ্যে যুরোপীয় মহাসময়ের ভীষণ প্রলয়রূপ তার অতি বিপুল আয়োজন সমেত চোখের সামনে দেখা দিয়েছিল- এই যুগান্তরসাধিনী সর্বনাশাকে আমাদের খোড়েঘরের চণ্ডীমণ্ডপে প্রতিষ্ঠা করতে পারব সে দুরাশা মন থেকে লুপ্ত হয়ে গেল ; সমারোহ করে আত্মহত্যা করবার মতোও আয়োজন ঘরে নেই। তখন ঠিক করলুম, ন্যাশনাল দুর্গের গোড়া পাকা করতে হবে। স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলুম, ধাঁচতে যদি চাই আদিম যুগের হত দুখানায় যে কটা নখ আছে তা দিয়ে লড়াই করা চলবে না। এ যুগের যন্মের সঙ্গে যমের