পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ত্রয়োদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৭৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লিপিকা V? একদিন রাত্রে ঘুমের মধ্যেও সে যেন শুনতে পেলে সমুদ্রগর্জনের মতো শব্দ। দলে দলে দেশবিদেশের লোক চলেছে- কেউ বা রথে, কেউ বা পায়ে হেঁটে ; কেউ বা বোঝাপিঠে নিয়ে, কেউ বা বোঝা ফেলে দিয়ে । সকালে যখন সে জেগে উঠল তখন যাত্রীর গানে পাখির গান আর শোনা যায় না। ওর হঠাৎ মনে হল, “আমাকেও যেতে হবে ।” অমনি মনে পড়ে গেল, “আমার যে পুজো আছে, আমার তো যাবার জো নেই।” তখনই ছুটে চলল তার বাগানের দিকে যেখানে মূর্তি 'সাজিয়ে রেখেছে। গিয়ে দেখে মুর্তি কোথায় ! বেদীর উপর দিয়ে পথ হয়ে গেছে। লোকের পরে লোক চলে, বিশ্রাম নেই । “এইখানে যাকে বসিয়ে রেখেছিলেম সে কোথায়।” কে তার মনের মধ্যে বলে উঠল, “যারা চলেছে তাদেরই মধ্যে।’ এমন সময় ছোটো ছেলে এসে বললে, “আমাকে হাতে ধরে নিয়ে চলো ।” “কোথায় ।” ছেলে বললে, “মেলার মধ্যে তুমিও যাবে না ?” মেয়ে বললে, “হা, আমিও যাব ।” যে বেদীর সামনে এসে সে বসে থাকত সেই বেদীর উপর হল তার পথ, আর মূর্তির মধ্যে যে ঢেকে গিয়েছিল। সকল যাত্রীর মধ্যে তাকে পেলে । পীেৰ ১৩২৬ পরীর পরিচয় রাজপুত্রের বয়স কুড়ি পার হয়ে যায়, দেশবিদেশ থেকে বিবাহের সম্বন্ধ আসে। ঘটক বললে, “বাহালীকরজের মেয়ে রূপসী বটে, যেন সাদা গোলাপের পুষ্পবৃষ্টি।” রাজপুত্র মুখ ফিরিয়ে থাকে, জবাব করে না। দূত এসে বললে, “গান্ধীররাজের মেয়ের অঙ্গে অঙ্গে লাবণ্য ফেটে পড়ছে, যেন দ্রাক্ষালতায় আঙুরের গুচ্ছ ।” রাজপুত্র শিকারের ছলে বনে চলে যায়। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, ফিরে আসে না । দূত এসে বললে, “কাম্বোজের রাজকন্যাকে দেখে এলেম ; ভোলবেলাকার দিগন্তরেখাটির মতো স্বাকী চোখের পল্লব, শিশিরে স্নিগ্ধ, আলোতে উজ্জ্বল ।” রাজপুত্র ভর্তুহরির কাব্য পড়তে লাগল, পুঁথি থেকে চোখ তুলল। না । রাজা বললে, “এর কারণ ? ডাকো দেখি মন্ত্রীর পুত্রকে ৷” টুধু এল। রাজা বললে, “তুমি তাে আমার ছেলের মত সত্য করে বলে বিবাহে তার ক্ষা 2ाश् हकका ” মন্ত্রীর পুত্র বললে, “মহারাজ, যখন থেকে তোমার ছেলে পরীস্থানের কাহিনী শুনেছে সেই অবধি তার কামনা, সে পরী বিয়ে করবে ।